Thalassemia patients: মাঝে মাঝেই জোগান থাকছে না প্রাণদায়ী ওষুধের, থ্যালাসেমিয়া রোগীরা সংকটে

মুম্বইয়ের বাসিন্দা মকরন্দ সার্ভ। বয়স চল্লিশের কোঠা পেরোয়নি এখনও। হঠাৎ করেই একদিন শরীরে ভয়ঙ্কর ব্যথা। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে একাধিক পরীক্ষা করতে হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায়, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়েছেন মকরন্দ। কথাটা শোনার পর পায়ের তলার মাটি সরে যায় তাঁর। রোগটির চিকিৎসা এমনই যে চাকরি ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে। তাঁর কথায়, প্রয়াত বাবার পেনশনের টাকা দিয়েই এখন তাঁর ও তাঁর মা দুজনের সংসার কোনও মতে চলছে। থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য তাঁকে সরকারি হাসপাতালের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে হয়। এখন এতেই দেখা দিয়েছে নতুন বিপত্তি।

বেশ কয়েক মাস ধরে মুম্বইয়ের সরকারি হাসপাতালগুলিতে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসার জন্য দরকারি আয়রন চিলেটর ওষুধটির আকাল পড়েছে সরকারি হাসপাতালে। এতে মকরন্দের মতো বহু রোগীই সমস্যায় ভুগছেন। সাধারণত সরকারি হাসপাতালে ওষুধ মজুত না থাকলে রোগীদের বেসরকারি সংস্থাগুলির উপর নির্ভর করতে হয়। তারা সাহায্যের জোগান দিলে তবেই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। মুম্বইয়ের থ্যালাসেমিয়া রোগীরা এখন এই সমস্যতেই ভুগছেন। 

মকরন্দের কথায়, ব্লাড ট্রান্সফিউশন নামের একটি গুরুতর চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে নিয়মিত যেতে হয় তাঁদের। এই চিকিৎসার জন্য তাঁকে এখন প্রতি মাসে ২০০০০ টাকার ব্যবস্থা করতে হয়। সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা বিনামূল্যে হয়। কিন্তু ওষুধের ঘাটতির কারণে সেই সুবিধা পাবার জো নেই। এর ফলে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রোজই গাদা গাদা ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। সাহায্যের আর্তি জানিয়ে প্রায়ই তাঁদের ছুটে যেতে হয় বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে। এক সংস্থার কাছে সাহায্য না পেলে অন্য সংস্থা, এভাবেই হন্যে হয়ে নিজেদের চিকিৎসার সরঞ্জাম নিজেদেরই খুঁজে নিতে হচ্ছে। মকরন্দের কথায়, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রোগী একসঙ্গে লোকমান্য তিলক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে চিঠিও লিখেছেন। সমাজকর্মী অশোক খাতুজা এই বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরাসরি জানিয়ে ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথায়, কেন্দ্রীয় হাসপাতালে ঘাটতির কারণেই এমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শহরের হাসপাতালগুলিকে। প্রসঙ্গত, চিকিৎসার অভাবে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ১০ জন শিশুকে অকালে প্রাণ হারাতে হয়। তবে সরকারি হাসপাতালগুলি চাইলেই বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারে। সেই অনুযায়ী, বেশ কিছু অর্থও বরাদ্দ করা থাকে। তারপরেও এমন পরিস্থিতির কারণ কী তা নিয়ে রোগীরা এখনও ধন্দে।