ভুয়ো ওয়েবসাইটে চাকরি প্রতারণা, ফাঁদে ৫০ হাজার বেকার, বিরাট চক্রের পর্দাফাঁস

দেবব্রত মোহান্তি

ওড়িশার ইকোনমিক অফিস উইং শনিবার বড়সর প্রতারণাচক্রে পর্দাফাঁস করল। ওই চক্র প্রায় ৫০০০০ যুবক যুবতীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। অন্তত ৫টি রাজ্যে তারা এই প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশের আলিগড় থেকে এই চক্রের এক মাথাকে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর।

ওড়িশার ইকোনমিক অফিস উইংয়ের ইনস্পেক্টর জেনারেল জয় নারায়ণ পঙ্কজ জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের টেকস্যাভি ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। ওয়েবসাইট ডেভেলপার্স কয়েকজনের সহায়তায় এই ভয়াবহ কীর্তি তারা করেছে। তিনি জানিয়েছেন,আলিগড়ের ২৫ বছর বয়সী এক বিটেক ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপরই এই গোটা চক্রের সম্পর্কে ইঙ্গিত মেলে। এরপর তদ্ন্ত ক্রমে এগোতে থাকে। তারপর একে একে গোটা চক্রের সম্পর্কে তথ্য় মেলে। এদিকে আলিগড়ের আদালত ৫দিনের ট্রানসিট রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছে। তারপরই তাকে ওড়িশায় আনা হচ্ছে।

ঠিক কীভাবে কাজ করত এই প্রতারণা চক্র?

ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতারকরা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিল। সেটা অনেকটাই সরকারি ওয়েবসাইটের মতোই। সরকারি ওয়েবসাইটকে নকল করে তৈরি হয়েছিল এই ওয়েবসাইট। স্বাস্থ্য দফতর ও স্কিল ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে কাজ দেওয়া হবে একথা উল্লেখ করা হয়েছিল ওয়েবসাইটে। প্রধানমন্ত্রী স্কিমের নাম উল্লেখ করে এই ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয়েছিল। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একের পর এক ক্ষেত্রে বেকার যুবক যুবতীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয় বলে অভিযোগ। গুজরাট, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশায় এই প্রতারণাচক্র জাল বিছিয়েছিল বলে অভিযোগ।

একেবারে ভয়াবহ প্রতারণা। সেই ভুয়ো ওয়েবসাইটের নাম জীবন স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা, ভারতীয় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা, গ্রামীণ সমাজ মানব স্বাস্থ্য় সেবা। এই নাম ব্য়বহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছিল। তারপরই শুরু হয় প্রতারণার জাল। স্থানীয় সংবাদপত্রেও এনিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তারা বেকার যুবক যুবতীদের প্রলোভন দেখাত। এরপর হোয়াটস অ্য়াপ, ভুয়ো পরিচয়পত্রের মাধ্যমে প্রতারণার জাল ফেলত। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টের মাধ্যমে তারা টাকা তোলাও শুরু করে দেয়। এদিকে রেজিস্ট্রেশন থেকে ইন্টারভিউ, ট্রেনিং থেকে প্লেসমেন্টের জন্য কর্মপ্রার্থীদের জন্য মোটা টাকা নেওয়া হত বলে অভিযোগ। ৩ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হত বলে খবর।

এদিকে বিশ্বাস অর্জনের জন্য তারা নানা ফন্দি আঁটত। বলত অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই তারা কাজ করে। এরপর কর্মপ্রার্থীরা টাকা দিলেই যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ করে দিত।