Pesticides in breast milk: মায়ের দুধে মিলছে কীটনাশক, মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে সদ্যজাত শিশুর

স্তনপানের সময় মায়ের শরীর থেকে সদ্যজাত শিশুর শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে কীটনাশকের রাসায়নিক।  এর ফলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে জটিলতা দেখা দিতে পারে । সম্প্রতি পরিবেশ সংক্রান্ত বিজ্ঞান পত্রিকা এনভারমেন্টাল রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে এই  গবেষণাপত্র। বিজ্ঞানীদের কথায়,  শস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কীটনাশকই প্রবেশ করছে শরীরে।  ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ছে মাতৃস্তন্যে। এছাড়াও, গবেষণা থেকে পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, মাছ, মাংস, ডিম ও সামুদ্রিক খাবার খেলে শরীরে কীটনাশকজাত রাসায়নিকের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। পশুপ্রতিপালনে ব্যবহৃত রাসায়নিকই ক্ষতি করছে মাতৃদুগ্ধের। 

কীটনাশক কতটা ক্ষতি করছে সদ্যজাত শিশুদের, এটাই ছিল এই গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। দেখা গিয়েছে মায়ের দুধে থাকা অর্গ্যানোক্লোরিন  কীটনাশক (ওসিপি) শিশুর শরীরে প্রবেশ করে এন্ডোক্রিনের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত করে। এন্ডোক্রিন অর্থাৎ হরমোন গ্রন্থির কাজে বাধা দেয় এমন রাসায়নিক পদার্থ প্রবেশ করছে ওসিপির মাধ্যমে। হরমোন গ্রন্থির কাজে বাধা পড়লে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠাতেই জটিলতা দেখা দিতে পারে। 

পরীক্ষাটি নিখুঁত করার জন্য উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কলোস্ট্রাম (মা হওয়ার পর প্রথম যে গাঢ় হলুদ দুধ ক্ষরিত হয়) ও মাতৃদুগ্ধের মোট ১৩০ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মায়ের ল্যাকটেশন পর্বের (অর্থাৎ, যে সময় একজন মহিলা দুগ্ধ ক্ষরণে সক্ষম থাকেন) বিভিন্ন সময় দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কীটনাশক সংশ্লেষের জন্য গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-মাস স্পেকট্রোমেট্রি পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। খেলোয়াড়দের শরীরে ড্রাগ আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে সাধারণত এই পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। এছাড়াও, রাসায়নিক অস্ত্র ও বিষ্ফোরক পরীক্ষা করতেও এই বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়। 

অন্যতম প্রধান গবেষক অধ্যাপক এ.এ. মাহদি জানান, কীটনাশকের সরাসরি সংস্পর্শে আসেন না এমন মহিলাদের থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর জন্য ফ্যাক্টরি বা কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত আছেন এমন মহিলাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তারপরেও সংগৃহীত নমুনায়  প্রচুর পরিমাণে কীটনাশকের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। অধ্যাপক মাহদির কথায়, কলোস্ট্রামের তুলনায় স্তনদুগ্ধে বেশি পরিমাণে কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, একজন মায়ের ল্যাকটেশন  পর্বে শিশুর সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।  প্রসঙ্গ্ত, মাহদি গত দুদশক ধরে, মানবদেহে ভারী ধাতুর বিষক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছেন। 

তাঁর কথায়, ডায়েটের সমস্যা থেকেই দেখা দিচ্ছে এই বিপদ। মায়ের ডায়েটে থাকা অধিকাংশ শস্যই কীটনাশকের সাহায্যে উৎপাদিত। এর পাশাপাশি পোলট্রি ও পুকুরে চাষ করা প্রাণীজ পদ ডায়েটে থাকলে বিপদ বাড়ছে বৈ কমছে না। দেখা গিয়েছে, মাংস, ডিম, সামুদ্রিক খাবার থেকে সাড়ে তিনগুণ বেশি কীটনাশক মিশে যাচ্ছে মায়ের শরীরে।