ABP Exclusive: Complaint Of Threatening Players And Extortion In Bengal Chess, Grandmaster Dibyendu Barua Gives Reaction

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: বাংলার দাবাড়ুদের ভয় দেখানো হচ্ছে? চাওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা?

অভিযোগের তির দিব্যেন্দু বড়ুয়ার (Dibyendu Barua) দিকে। যা নিয়ে বুধবার তোলপাড় পড়ে গেল বাংলার খেলার ময়দানে। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার বিখ্যাত গ্র্যান্ডমাস্টার। দুর্নীতির ওপর থেকে পর্দা সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু।

ঘটনাটা ঠিক কী?

বুধবার বেঙ্গল চেজ অ্যাসোসিয়েশন থেকে ই-মেল মারফত সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয় যে, বাংলার দাবাড়ুদের হুমকি দিচ্ছেন দিব্যেন্দু ও তাঁর সঙ্গীরা। অভিযোগ করা হয়, দিব্যেন্দুদের সংস্থার অনুমোদিত নয়, এমন টুর্নামেন্টে অংশ নিলেই ভয় দেখানো হচ্ছে দাবাড়ুদের। এমনকী, বলা হয় বেঙ্গল চেজ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে হেরে গেলেও সারা বাংলা দাবা সংস্থার নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি না মানলে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকিও নাকি দেওয়া হচ্ছে!

যে ই-মেল ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে যায়। এবিপি লাইভের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় দিব্যেন্দু বড়ুয়ার সঙ্গে। গোটা ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত। বলেন, ‘যারা এই অভিযোগ করেছে, সেই বেঙ্গল চেজ অ্যাসোসিয়েশনের কোনও অস্তিত্বই নেই। অল ইন্ডিয়া চেজ ফেডারেশন হচ্ছে ভারতের দাবার প্রধান নিয়ামক সংস্থা। তাদের অনুমোদিত সংস্থা হল সারা বাংলা দাবা সংস্থা।’ ঘটনাচক্রে অনুমোদিত যে সংস্থার প্রেসিডেন্ট দিব্যেন্দু।

দিব্যেন্দু যোগ করেন, ‘বেঙ্গল চেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব অতনু লাহিড়ীর বিরুদ্ধে টাকা তছরুপ, সই জাল করা-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত করা হয়। তাঁর পরিবর্তে অন্তরীপ রায়কে আনা হয়েছে। যদিও ইনি সচিব নন। দিলীপ চক্রবর্তী সচিব ছিলেন। অন্তরীপ অভিযোগ করে বিবৃতি পাঠিয়েছেন। উনি তো নির্বাচিতই নন।’

পাশাপাশি দিব্যেন্দু বলছেন, ‘এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও কারণ নেই। যাদের অস্তিত্ব নেই, তাদের কথায় প্রতিক্রিয়া দেওয়ার মানে হয় না। আমাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চলছে। আমি কাউকে ভয় দেখাইনি। শুধু বলেছি সারা বাংলা দাবা সংস্থা অনুমোদিত টুর্নামেন্টে খেলতে। এখন প্রচুর একদিনের টুর্নামেন্ট হচ্ছে সারা বাংলা দাবা সংস্থাকে না জানিয়ে। এতে দাবাড়ুদের ক্ষতি হচ্ছে। সর্বভারতীয় স্তরের জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছে না।’

রাতের দিকে সারা বাংলা দাবা সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় যে, অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত দিব্যেন্দু বড়ুয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলার দাবার উন্নতিতে যে কোনওরকম আপোস করা হবে না, তাও জানানো হয় সেই বিবৃতিতে।

সারা বাংলা দাবা সংস্থার প্রেসিডেন্ট দিব্যেন্দু বলছেন, ‘২০১১ সাল থেকেই বাংলার দাবার উন্নতি নিয়ে খাটছি। সততার সঙ্গে কাজ করছি। দুর্নীতি হোক চাই না। বেঙ্গল চেজ অ্যাসোসিয়েশনের নামে আদিবাসী উন্নয়ন খাতে আসা টাকা নিজস্ব ফাউন্ডেশনে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এক কোটিরও বেশি টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কেন সেই টাকা বাংলার দাবাড়ুরা পাবে না? কেন অনুমোদিত সংস্থা টাকা না পেয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাডেমিতে টাকা ঢোকানো হবে! সচিব পদে থেকে কেন কেউ ব্যক্তিগত ফাউন্ডেশনে টাকা ঢোকাবে, এটাই ছিল আমার প্রশ্ন।’

দিব্যেন্দু যোগ করছেন, ‘আমার শ্যালক শ্যামল দত্তকে সুবিধা করে দিয়েছি বলে অভিযোগ করেছে! চাইলে আমি আগেই শ্যামল দত্তকে আনতে পারতাম। শ্যামল দত্তের নামে কোনও অভিযোগ কেউ করতে পারবে?’ তাঁর জোরাল দাবি, ‘একদিনের টুর্নামেন্ট বন্ধ করতে হবে। জাতীয় স্তরে আরও ভাল খেলার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। বাংলার থেকে দশজন গ্র্যান্ডমাস্টার রয়েছে। সেটা ২০জন হতে পারত। বাংলার দাবাকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই হবে।’