দারিদ্র্য কমাতে দরকার কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা: এফবিসিসিআই

দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠন ও গ্রামীণ উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। তবে দেশে দারিদ্র্য নিরসনে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণসহ সম্পদের সুষম বণ্টন অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত দারিদ্র্য হ্রাস ও গ্রামীণ উন্নয়ন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিবছর হাজার হাজার তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষিত হয়ে বের হচ্ছে। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থার অভাবে দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। এমনকি বাংলাদেশে শ্রমিকদের মজুরিও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। গ্রামীণ উন্নয়ন ও অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে দারিদ্র্য কমাতে কৃষি ও শিল্পকারখানার চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো দরকার। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, “বিভিন্ন আলোচনায় দারিদ্র্য নিরসন প্রসঙ্গ আসলেই আঞ্চলিক উন্নয়ন বৈষম্যের কথা উঠে আসে, যা ভালো ব্যাপার নয়। বঙ্গবন্ধুর প্রধান লক্ষ্যই ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা।” দারিদ্র্য কমাতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরকেও নিজের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার আহ্বান জানান সিনিয়র সহ-সভাপতি।

কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হাসিনা নেওয়াজ বলেন, বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ডে বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যসীমা থেকে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগোচ্ছে। তবে গ্রামাঞ্চলসহ দেশের বেশকিছু অঞ্চলে এখনও দারিদ্র্য রয়ে গেছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক ও কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল হক। তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে খাদ্য, ভোজ্য তেল, চিনি ইত্যাদির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দারিদ্র্য নিরসনে সবার আগে খাদ্য নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সরিষা, ডাল ইত্যাদি চাষাবাদ হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে এগুলোর পুনরুদ্ধার জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

দারিদ্র্য হ্রাস ও গ্রামীণ উন্নয়নে পাঁচ কিংবা দশটি করে পরিবার উন্নত করার মাধ্যমে যথাযথ উপায়ে চেষ্টা করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর পরিচালক আবু হোসেন ভুঁইয়া রানু।

বৈঠকে আরও কথা বলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুর রহমান, ওসমান গণি, তৌহিদা সুলতানাসহ কমিটির অন্য সদস্যরা।

আবাদি জমি বাড়াতে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি পরিচালনা, কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন, শিল্পনগরীর তড়িৎ বাস্তবায়ন, উপজেলা পর্যায়ে বিশেষায়িত কোল্ড স্টোরেজ প্রতিষ্ঠা, উপজেলার কৃষি উন্নয়ন কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণের দাবি জানান বক্তারা।