কারিগরিতে ‘ডিমান্ড ড্রিভেন’ সিস্টেম চালু করতে চান নওফেল

কারিগরি শিক্ষায় বিদ্যমান ‘সাপ্লাই ড্রিভেন’ সিস্টেমের পরিবর্তন করে ‘ডিমান্ড ড্রিভেন’ সিস্টেম চালু করতে চান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এন্ট্রাপ্রেনারস অর্গানাইজেশন (ইও) আয়োজিত বাংলাদেশ গ্লোবাল স্টুডেন্ট এন্ট্রাপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডের (জিএসইএ) গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরির কাজ করছে এন্ট্রাপ্রেনারস অর্গানাইজেশন (ইও)। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পর্বের ইও বাংলাদেশ গ্লোবাল স্টুডেন্ট এন্ট্রাপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডের (জিএসইএ) গ্র্যান্ড ফাইনালের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশ্বজুড়ে ব্যবসার পরিবেশে পরিবর্তন আসছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে বদলে যাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যমান কারিগরি শিক্ষায় চালু আছে সাপ্লাই ড্রিভেন সিস্টেম। শিক্ষার্থীদের আমরা লেখাপড়া সাপ্লাই দেবো আর তাদের জন্য পদ সৃজন করে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবো– এটি হচ্ছে “পদ সৃজন” সিস্টেম। দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষায় “সাপ্লাই ড্রিভেন” সিস্টেম চালু আছে। এই সিস্টেম টেকসই সমাধান নয়।’

সাপ্লাই ড্রিভেন সিস্টেম চালু রেখে পদ সৃজনের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করার এই প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসার কথা আহ্বান জানান নওফেল। তিনি বলেন, ‘আমরা আউটকাম বেইজড এডুকেশন সিস্টেম চালু করছি। চাকরির বাজার চাহিদা অনুযায়ী চাকরি প্রার্থী প্রয়োজন। আমরা চাকরির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। তারপরও যদি না হয় তাহলে কারিগরি ইনস্টিটিউটগুলোকে সরকার এবং প্রাইভেট সেক্টরের ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করতে হবে।’ 

নওফেল বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাই কিন্তু তাদের যদি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে না পারি, পর্যাপ্ত স্কিলড না করতে পারি তাহলে কীভাবে তারা উদ্যোক্তা হবে? এ জন্য আমরা আউটকাম বেইজড এডুকেশন ব্যবস্থা তৈরির চেষ্টা করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের এমন শিক্ষা দিতে চাই যা বর্তমান যুগে উপযোগিতা আছে, চাকরির বাজারে চাহিদা আছে। যা এর আগে হয়নি। ’ 

এর আগে কয়েকবার শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেছেন, ‘কারিগরি শিক্ষা যেন সনদসর্বস্ব না হয়। শিক্ষার্থীরা যা শিখবে তা যেন প্রয়োগ করতে শেখে।’  

গ্লোবাল স্টুডেন্ট এন্ট্রাপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডের (জিএসইএ) বাংলাদেশ পর্বের গ্র্যান্ড ফাইনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন– উদ্যোক্তা সংগঠনের বোর্ড অব ডিরেক্টর মি. মার্ক ও. স্টকলি, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি সামি আহমেদ, আইডিইএ’র প্রকল্প পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন এবং দক্ষিণ এশিয়ায়ান চেয়ার সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী ইনাম আহমেদ।

বিচারক প্যানেলে ছিলেন– গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিইও ফারজানাহ চৌধুরী, ইও বাংলাদেশ সদস্য শামীম আহসান, এসবিকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, আইডিইএ প্রজেক্টসের সিনিয়র কনসালটেন্ট অপারেশন বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ গোস্বামী এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের সিইও কায়সার হামিদ।

গ্র্যান্ড ফাইনালে প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটের) শিক্ষার্থী কায়সার আহমেদ। দ্বিতীয় হয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফাত জামিল এবং তৃতীয় হয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারোয়ার জাহান। বিজয়ীরা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

/এসএমএ/