কুড়িগ্রামে এবার শিক্ষককে লাঞ্ছিত করলেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক

প্রকাশিত: ১০:২২ অপরাহ্ণ, ২২ জানুয়ারি ২০২৩

ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত নিতে এসে এক পর্যায়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করলেন কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. মাসুদ রানা।

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক’র কক্ষে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে জেলা জুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষক বাদি হয়ে ৪জনের নাম উল্লেখ করে এবং কিছু অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা অন্যরা হলেন,পৌর এলাকার পুরাতন পশু হাসপাতাল মোড়ের শামসুল হকের ছেলে রুপন মিয়া, পুরাতন রেল ষ্টেশনের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আমিনুর রহমান,কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ মিয়া।

নির্যাতিত শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, পিয়নের মুখে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হট্টগোলের খবর পেয়ে সেখানে যাই। কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের ভর্তি বাতিল বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাদের সাথে কথা বলতে গেলে ১নং আসামী কুড়িগ্রাম মোল্লাপাড়ার ব্যাসায়ী আব্দুল আজিজ’র পূত্র মো. মাসুদ রানা প্রথমে আমার উপর চড়াও হয়। এরপর ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যায়। বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছি।

তবে এই বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদ রানা জানান,আমার সন্তানকে ১৮ ডিসেম্বর স্কুলে ভর্তি করাই। ২৮ ডিসেম্বর স্কুলের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারি আমার সন্তানসহ ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। সে ব্যাপারে কয়েকজন অভিভাবকসহ প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত দিয়ে কপি গ্রহন করি। এসময় কথা বলার এক পর্যায়ে একজন শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে পরলে তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। আমি তাকে লাঞ্ছিত করি নাই।

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক জানান, স্কুলে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকগণ শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করায় ঢাকায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেয়া হয়। এনিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এরই প্রতিবাদ করায় সিনিয়র সহকারি শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানা। তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলতে বলতে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যান। এ ব্যাপারে মাসুদ রানাসহ, অভিভাবক মো. রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও মো. বিদ্যুৎ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের নামে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো: শাহরিয়ার জানান, বিষয়টি তদন্তাধিন রয়েছে।

শাকিল/সাএ