‘যোগ্যতার সঙ্গে মানুষকে জাগ্রত কছিলেন ডা. এস এ মালেক’

বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রয়াত সভাপতি ডা. এস এ মালেকের ১৫ বছরের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ছবি ও স্মৃতি নিয়ে আলোকচিত্রশিল্পী ফোজিত শেখ বাবুর দুদিনব্যাপী এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

পররাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘চিন্তাবিদ ও গবেষক ডা. মালেক ছিলেন প্রচারবিমুখ। এ জন্য আমার সঙ্গে খুব ভালো যেত। উনি ছিলেন সত্য ও স্পষ্টবাদী মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক ধরনের উল্টাপাল্টা হচ্ছে, মালেক সাহেব থাকলে উনার সঙ্গে সেটা আলাপ করে সৎ সাহসের জন্য সেটা বলতে পারতেন। উনার মৃত্যু আমাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি।’ 

ডা. এস এ মালেকের রুহের মাগফিরাত কামনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু যে ধরনের সোনার মানুষ প্রত্যাশা করতেন, তিনি সে রকমই ছিলেন। চাঁদাবাজি, মাতব্বরি, নেতৃত্ব নয় বরং সোনার মানুষ সৃষ্টি করাই ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদে’র মূল লক্ষ্য ও আকর্ষণ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আর এই কাজগুলো করতে পারাই এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সাথর্কতা।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান লাল্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানসহ আরও অনেকে। 

এ সময় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন ও এটার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও তার লক্ষ্য প্রচার ও প্রসার করে বাংলার মানুষকে জাগ্রত করার কাজ ডা. এস এ মালেক অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং সুদীর্ঘকাল একনিষ্ঠভাবে উনি সেই কাজটি করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সাল আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃসময় ছিল। সেই সময়ের মধ্যেও ডা. এস এম মালেক, কে এম সোবহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল মতিন চৌধুরী, যাকে অপবাদ দিয়ে জেলে নেওয়া হয়েছিল, সেই মানুষগুলো সেদিন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ব্যানারে যেভাবে দাঁড়িয়েছিল, সেটা ভাবতেই আমি শিহরিত হই। আর বর্তমান আমার অনেক ছাত্র-ছাত্রী বা সহকর্মীদের দেখি, ছোট কিছু করে বা দু-চারটা স্লোগান দিয়ে বলে তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তারা এটার অভিযোগ নিয়ে আসে এবং মাঝেমধ্যে তাদের এমন দৌরাত্ম্য দেখা যায়, সারা দেশে আমাদের এত অর্জন থাকার পরও তাদের কাজের জন্য আমাদের মাথা নুয়ে রাখতে হয়।’

এ সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিটি কাজে আমরা অতীতে ফিরে গেলে ডা. মালেককে খুঁজে পাই। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার মানুষগুলো এমনই হয়। মাটি ও মানুষকে ভালোবাসলে তার প্রতিদান অনন্য।’

তিনি বলেন, ডা. মালেক আমাদের মাঝে নেই কিন্তু চিরকালীন হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শচর্চার মধ্য দিয়ে মালেকের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করার আহ্বান জানান তিনি।