ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থনে এবার প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে এই নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া জয়লাভ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
‘উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সমর্থকগোষ্ঠী’র ব্যানারে কর্মীসভার আয়োজন করে কৌশলে প্রচারণায় নেমেছেন কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত সরাইল উপজেলার সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে এক কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
কর্মীসভায় আহমেদ হোসেন বলেন, ‘উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে আগে কেউ চিনতো না। এখন সবাই চেনে। আমিও চিনতাম না। জীবনে প্রথম দেখলাম। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে গেছি। এখন তিনি নিরপেক্ষ লোক। তিনি বিএনপিরও নন, আওয়ামী লীগের ও জাতীয় পার্টিরও নন। তাকে এখন আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপি চায়, জাতীয় পার্টিও চায়।’
তারেক রহমানের বেয়াদবির প্রতিবাদে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সমর্থন দিয়েছি জানিয়ে আহমেদ হোসেন বলেন, ‘আপনাদের এলাকার মুরব্বির সঙ্গে বেয়াদবি করেছে, তা কি মেনে নেওয়া যায়? বেয়াদবি মেনে নেওয়া যায় না। এজন্যই আমরা তাকে সমর্থন দিয়েছি। নাম দিয়েছি “উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থকগোষ্ঠী”। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া জয়লাভ করবেন। মাঠের জোয়ার দেখে এটা সুনিশ্চিত বলা যায়।’
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘আসন্ন উপনির্বাচনে আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কলার ছড়া প্রতীকে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেবেন। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সমর্থন করি। আমার আগে যারা যা যা বলেছেন এবং আমার পরে প্রধান অতিথি যা বলবেন, সবগুলোর সঙ্গে আমি একমত। কিছু লোক আছে যাদের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নাই, তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মেসেজ পাঠিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এই বিভ্রান্তি দূর করতে, একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসেবে, একজন সাহসী মানুষ হিসেবে যিনি তারেক রহমানের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় এই পড়ন্ত বয়সেই মাথা উঁচু করে আপন অস্তিত্বের ঘোষণা দিয়েছেন, তাকে আমি সমর্থন করি। তিনি একজন ভালো মানুষ। তার বিজয় নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি। তার বিজয় সুনিশ্চিত করেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবেন।’
সভার শুরুতেই উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে কর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাকে সমর্থন জানান। পরে সভায় সব বক্তাই উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে ‘কলার ছড়া’ প্রতীকে ভোট চেয়েছেন। তবে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া তার বক্তব্যে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুরের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন সরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের তিন নেতা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান আনসারী, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান, জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহনুর ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম।