Padma Vibhushan for ORS pioneer Dilip Mahalanabis: মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ পেলেন ORS-র স্রষ্টা দিলীপ মহালানবীশ

মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ পেলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা ওআরএসের স্রষ্টা দিলীপ মহালানবীশ। যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা থেকে ফিরে এসে বনগাঁ সীমান্তে কলেরা আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা করেছিলেন। 

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বুধবার রাতের দিকে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এবার মেডিসিন (চিকিৎসা) ক্ষেত্রে দিলীপ মহালানবীশকে পদ্মবিভূষণ দেওয়া হয়েছে। যিনি ওআরএস (ওরাল রিড্রাইডেশন সলিউশন) তৈরি করেছিলেন। যে ওআরএস বিশ্বজুড়ে পাঁচ কোটির বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছিল। প্রচুর মানুষ কলেরা, ডায়রিয়ার মতো রোগ থেকে সেরে উঠেছিলেন। যা সেইসময় মহামারীর আকার ধারণ করেছিল।

১৯৩৪ সালের অধুনা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছিলেন দিলীপ মহালানবীশ। ১৯৫৮ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তারপর ইন্টার্ন হিসেবে মেডিক্যাল কলেজে যোগ দিয়েছিলেন। ষাটের দশকে যখন ব্রিটিশ সরকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস চালু করেছিল, তখন তিনি মেডিসিন পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। লন্ডন এবং এডিনবরা থেকে দুটি ডিগ্রি অর্জনের পর প্রথম ভারতীয় হিসেবে কুইন এলিজাবেথ হসপিটাল ফর চিলড্রেনের রেজিস্ট্রার হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: Padma Shri for Rakesh Jhunjhunwala: রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালাকে সম্মান দেশের, মরণোত্তর পদ্মশ্রী পাচ্ছেন ভারতের ‘বিগ বুল’

কলেরা ও ডায়েরিয়া নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন দিলীপ মহালানবীশ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচুর মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। তারপর ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান, ইজিপ্ট ও ইয়েমেনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোলেরা নিয়ন্ত্রণ বিভাগে কাজ করেছিলেন। আটের দশকে ব্যাকটেরিয়া-ঘটিত অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হুয়ের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন।

২০০৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) একটি সাক্ষাৎকারে দিলীপ মহালানবীশ বলেছিলেন, ‘কোলেরার কারণে প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছিলেন। প্রচুর ভয়ঙ্কর কাহিনি সামনে আসছিল। আমি যখন ফিরেছিলাম, তখন অত্যন্ত হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বনগাঁর হাসপাতালে দুটি ঘর ছিল। হাসপাতালের মেঝেতে কলেরায় গুরুতর অসুস্থ রোগীরা পড়েছিলেন। আইভি স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসার সময় রীতিমতো তাঁদের মুখে এবং বমির উপর হাঁটু গেড়ে বসতে হচ্ছিল। ওখানে পৌঁছানোর পর আমি বুঝেছিলাম যে আমরা লড়াইটা হেরে যাচ্ছি। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে আইভি স্যালাইন ছিল এবং আমার দলের মাত্র দু’জন ফ্লুইড দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত ছিলেন।’

আরও পড়ুন: Dilip Mahalanabis passed away: প্রয়াত চিকিৎসক দিলীপ মহালানবীশ, ওআরএস-র জনকে জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ বাংলা

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সেইসময় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার মতো সুযোগ ছিল। কী করব, সেটা নিজেকেই ঠিক করতে হত। তাই আমার কাছে কোনও বিকল্প ছিল না এবং যতটা বেশি সম্ভব, ততটা ওআরএস ব্যবহার করতে হচ্ছিল। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে এটা কাজে দেয়। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে কাজে দেবে কিনা, সেটা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না। আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে এটা কাজ না করলে আমাদের হাতে আর কোনও বিকল্প থাকবে না। যখন আমরা দেখি যে ওটা কাজ করছে, তখন আমরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলাম।’

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)