পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু বা এক শব্দে যাকে শুধু ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ বলা হয়, তা নিয়ে রীতিমতো জটিলতা রয়েছে বহু দিন ধরেই। পৃথিবীর নানা দেশে এর নিয়ম আলাদা আলাদা। কোথাও কোথাও এখনও স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধতাও দেওয়া হয়নি এখনও। ভারতে এই আইন এবং তার প্রয়োগ নিয়ে এত দিন পর্যন্ত বেশ কিছু ধোঁয়াশা এবং জটিলতা ছিল। তার অনেকগুলিই এবার কাটতে চলেছে। এই বিষয়টিকে এখন অনেক বেশি সহজ সরল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তরফে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তরফে ২০১৮ সালে প্রণয়ন করা আইন এবং নিয়মে বেশ কিছু বদল আনা হল। দেখে নেওয়া যাক, সেগুলি কী কী।
লিভিং উইল (স্বেচ্ছায় চিকিৎসা বন্ধ করার আবেদন)
আগে কী ছিল: জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অ্যাটেসটেড বা সই করার পরেই তা বৈধ হত।
এখন কী হল: এখন গেজেটেড অফিসারের সই এবং নোটারি থাকলেও তা বৈধ বলে ধরা হবে।
লিভিং উইল কোথায় থাকবে
আগে কী ছিল: জেলা আদালতে রাখা থাকবে এই লিভিং উইল।
এখন কী হল: ন্যাশনাল হেলথ রেকর্ডের আওতায় থাকবে এটি। যে কোনও হাসপাতাল তা দেখতে পাবে।
রোগীকে পরীক্ষার প্রাথমিক বোর্ড
আগে কী ছিল: চার জন সদস্য নিয়ে বোর্ড তৈরি হবে। তার মধ্যে জেনারেল মেডিসিন, হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ, কিডনির রোগ, মনোরোগ এভং ক্যানসার রোগের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে থেকে যে কোনও চার জন থাকতে পারেন। প্রত্যেক চিকিৎসকের অন্তত ২০ বছরের অভিজ্ঞতা দরকার।
এখন কী হল: যে চিকিৎসকের অধীনে রোগী রয়েছেন, তিনি-সহ অন্য যে কোনও দু’জন চিকিৎসক থাকতে পারেন বোর্ডে। প্রত্যেকের অভিজ্ঞতা ৫ বছর হলেই হবে।
কত ক্ষণে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে
আগে কী ছিল: কখন চিকিৎসা বন্ধ করা হবে, তার সময়সীমা নির্দিষ্ট ছিল না।
এখন কী হল: বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা বন্ধ করতে পারে।
দ্বিতীয় বোর্ড
আগে কী ছিল: জেলার কালেক্টরকে দ্বিতীয় বোর্ড গঠন করতে হত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে।
এখন কী হল: হাসপাতালই দ্বিতীয় বোর্ড তৈরি করে নিতে পারবে।
আগামী দিনে পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আরও বেশ কিছু ধারণা পরিষ্কার হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তে বহু অস্পষ্টতাই কেটে গিয়েছে, এবং যাঁরা চিকিৎসা না চালিয়ে পরোক্ষভাবে স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে বহু জটিলতারই অবসান হল বলে মনে করা হচ্ছে।