আজ ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস | BD24Live.com

প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

আজ (২৭ জানুয়ারি) ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস। ১৯২২ সালের এ দিনে তদানিন্ত্রন বৃটিশ সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে সলঙ্গার হাটে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বিলেতি পন্য বর্জন আন্দোলনের কর্মিসহ সাধারণ হাটুরে জনতা শহীদ হয়। বৃটিশ শাসনামলে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনে জনতা উদ্বেলিত হয়ে বিলেতি পণ্য বর্জন করে স্বদেশী পন্য ব্যবহারের সংগ্রাম শুরু করেছিল। এমনি একটি আন্দোলনের ঢেউ এসে আছড়ে পরে সলঙ্গায়। সে সময় তৎকালীন পাবনা জেলার এবং বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গায় একটি ব্যবসায়িক জনপদ হিসেবে সপ্তাহে ২দিন হাট বসত।

১৯২২ সালের ২৭ শে জানুয়ারি শুক্রবার ছিল বড় হাট বার। মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা হাটে নামে বিলেতি পন্য কেনা বেচা বন্ধ করতে। আর এ স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীদের রুখতে ছুটে আসে পাবনা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আর. এন. দাস জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রাসাশক এস. কে সিনহা সহ ৪০ জন সশস্ত্র লাল পাগড়ীওয়ালা পুলিশ। সলঙ্গার গো হাটায় ছিল বিপ্লবী স্বদেশী কর্মীদের অফিস। পুলিশ কংগ্রেস অফিস ঘেরাও পূর্বক গ্রেফতার করে মাওলানা আব্দুর রশিদকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত করতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

বিদ্রোহে ফেটে পরে সলঙ্গার সংগ্রামী জনতা। জনতার ঢল ও আক্রোশ দেখে ম্যাজিষ্ট্রেট জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি চালাতে নির্দেশ দেয়। শুরু হয়ে যায় বুলেট বৃষ্টি। ৪০ টি রাইফেলের মধ্যে মাত্র ১টি রাইফেল থেকে কোন গুলি বের হয়নি। এ রাইফেলটি ছিল একজন বাক্ষণ পুলিশের। হত্যা কান্ডে হতাহতের সরকারী সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার দেখানো হলেও বেসরকারী মতে ১০ হাজারেরও অধিক বলে জানা যায়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে প্রতি বছর মাওলানা আব্দুর তর্কবাগীশ পাঠাগার ও সলঙ্গা সমাজ কল্যান সমিতি ৩ দিন ব্যাপি কর্মসূচী হাতে নেন কিন্তু করোনার প্রভাব বৃদ্ধির জন্য এ বছর ১ দিনের কর্মসুচি হাতে নেন। এছাড়াও সরকারী বেগম নূরুন নাহার তর্কবাগীশ অনার্স কলেজ, তর্কবাগীশ মহিলা মাদ্রাসা, তর্কবাগীশ উচ্চ বিদ্যালয়, বিদ্রোহী সলঙ্গা ও সলঙ্গা ফোরাম পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনা সভা ক্রিড়া প্রতিযোগিতা, র‌্যালী ও পুরস্কার বিতরন সহ নানা কর্মসুচী গ্রহন করেছে।

এদিকে ১০০ বছর পেরিয়ে গেলেও শহীদদের স্মরণে সলঙ্গায় নির্মান হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গত ২৮ জানুয়ারী ২০০৬ সালে স্থানী এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার একটি ফলক উন্মচন করা হলেও নির্মান করতে পারেনি স্মৃতিস্তম্ভ। গত প্রায় ২ বছর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান, লাইব্রেরী ও রির্সাচ সেন্টার নির্মানের প্রতিস্তুতি দেন। দিবসটি সকারী ভাবে পালনের জন্য দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সকরারী ভাবে দিবসটি পালন না হলেও স্থানীয় ভাবে দিবসটি পালন করা হয়।

সলঙ্গা মাওলানা আব্দুর তর্কবাগীশ পাঠাগার ও সলঙ্গা সমাজ কল্যান সমিতির সহ-সভাপতি গজেন্দ্রনাথ মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান নান্নু জানান, সলঙ্গা বিদ্রোহের স্থানটিতে শহীদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের জন্য সরকারী ভাবে পাশ হয়েছে শুনেছি। স্থানও নির্বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু অবৈধ দখলদারদের জন্য নির্মান করতে পারে নি স্মৃতিস্তম্ভ-লাইব্রেরি বা রির্সাচ সেন্টার। এবছর করোনর কারনে এক দিনের কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সালাউদ্দিন/সাএ