Although respecting Chandrakant Pandit, Manoj Tiwary is desperate to avenge last time defeat

সব্যসাচী বাগচী 

ঘরের মাঠ ইন্দোরের (Indore) হোলকার স্টেডিয়ামে (Holkar Cricket Stadium) কালো মাটির বাইশ গজে বাংলাকে (Bengal) স্বাগত জানাবে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh)। এই কালো মাটির পিচে স্পিনাররা সফল হতে পারেন। তাই অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) ফের একবার করণ লালের (Karan Lal) উপর ভরসা রাখছেন। ওপেনার হিসেবে করণ এর আগেও ব্যর্থ হয়েছেন। তবে স্পিনের হাত বেশ ভালো। সেইজন্য কাজী জুনেইদ সইফিকে বাইরে বসতে হবে। 

গতবারের সেমি ফাইনালে এই চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের (Chandrakant Pandit) দলের কাছেই বাংলাকে হারতে হয়েছিল। শেষ চারের সেই ম্যাচে মনোজ শতরান করেছিলেন। শতরান এসেছিল শাহবাজ আহমেদের (Shahbaz Ahmed) ব্যাট থেকেও। তবুও হার এড়ানো যায়নি। তবে এবার গতবারের রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়নদের তাদের ঘরের মাঠেই উড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন বঙ্গ অধিনায়ক। সেই বার্তা ইতিমধ্যেই সতীর্থদের দিয়ে রেখেছেন ‘মান্নি’। আর তাই তো বিপক্ষে আবেশ খান (Avesh Khan)-কুমার কার্তিকেয়র (Kumar Kartikeya) মতো বোলার, রজত পতিদার (Rajat Patidar)-আদিত্য শ্রীবাস্তবের (Aditya Shrivastava) মতো ব্যাটার থাকলেও মনোজ ও বঙ্গ ব্রিগেডের বাকিরা একেবারেই বিচলিত নন। আর কয়েক ঘন্টা পরেই চলতি রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy 2023) বদলার সেমি ফাইনালে (Ranji Trophy Semi Final 2023) খেলতে নামবে বাংলা। এর আগে জি ২৪ ঘণ্টাকে টেলিফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন বঙ্গ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ম্যাচ উইনার। 

প্রশ্ন: আপনি গতবারের সেমি ফাইনালে চাপের মুখে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০২ রান করেছিলেন। সেই ইনিংসের ভিডিয়ো দেখিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন? 

মনোজ তিওয়ারি: সেই ইনিংসটার কথা আমিও মনে রেখেছি। চাপের মুখে এর আগেও এমন ইনিংস খেলেছিলাম। তবে আক্ষেপের বিষয় হল, সেই সেমি ফাইনালে শতরানের পরেও দলকে জেতাতে পারিনি। তবে সেই ইনিংস নিয়ে দলের বাকিদের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। আর এবার আসা যাক এই ম্যাচের বিষয়ে। নিজের ব্যক্তিগত মাইলস্টোনের জন্য আগেও খেলিনি। এবারও সেই নীতি নিয়েই মাঠে নামব। আমার কাছে এবার রঞ্জি ট্রফি জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা নিয়েই ভাবছি। সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছি। পুরো মরসুমের বাকি ম্যাচগুলোর মতো এবারও একজোট হয়ে খেলব। পাঁচ দিনের ম্যাচে অনেক সময় থাকে। সেখানে যদি নিজে বড় রান যোগ করতে পারি, তাহলে বাড়তি আনন্দ তো হবেই। 

প্রশ্ন: আপনার দলের ওপেনিং সমস্যা তো মিটতেই চাইছে না। এবার কি ফের বদল আনবেন? 

মনোজ তিওয়ারি: হ্যাঁ। এটা চিন্তার বিষয়। তবে এখন হাতে সময় কম। তাই কাজীকে খেলাতে পারব না। ওপেনিংয়ে আবার করণ লালকে ফিরিয়ে আনব। কারণ বিপক্ষে তিন জন বাঁহাতি ব্যাটার আছে। তাই করণকে অফ স্পিনার হিসেবে আমরা ব্যবহার করব। 

প্রশ্ন: আপনাদের দলে কোনও চমক থাকবে? 

মনোজ তিওয়ারি: চমক কিনা বলতে পারব না। তবে সব ঠিক থাকলে আমরা তিন পেসার ও তিন স্পিনার কম্বিনেশনে দল সাজাতে চলেছি। জোরে বোলার হিসেবে আকাশ দীপ, মুকেশ কুমার অটোমেটিক চয়েস। যেহেতু করণ লাল খেলছে, তাই ওকে ওপেনিং ছাড়া অফ স্পিনার হিসেবেও ব্যবহার করতে চাই। দুই স্পিনার হিসেবে শাহবাজ আহমেদ ও প্রদীপ্ত প্রামাণিক তো থাকছেই। তৃতীয় পেসার হিসেবে আমরা ঈশান পোড়েলের জায়গায় আকাশ ঘটককে খেলাতে পারি। কারণ আকাশের ব্যাটের হাত ভালো। তাছাড়া গত দুই ম্যাচে আকাশ আট উইকেট নিয়েছে। তাই ওকে তো একটা সুযোগ দিতেই হবে। আসলে এই দলে যারা পারফর্ম করবে, তারাই প্রথম একাদশে থাকবে। 

প্রশ্ন: বিপক্ষের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত কত বড় ফ্যাক্টর? 

মনোজ তিওয়ারি: চান্দু স্যর আমাদের কাছে কত বড় ফ্যাক্টর সেটা পাঁচ দিনের শেষে বোঝা যাবে। আবার বলছি বিপক্ষের ক্রিকেটারদের নাম দেখে আমরা চিন্তিত নই। বরং জেতার জন্যই ছক তৈরি করছি। তবে তাই বলে চান্দু স্যরকে একেবারে সরিয়ে রাখার মতো মন্তব্য আমি করতে পারব না। খুবই দক্ষ কোচ। উনি এতটাই দক্ষ যে বিদর্ভকে দু’বার রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন করানোর পর, গতবার মধ্যপ্রদেশের দায়িত্ব নিয়েই চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন। স্যরের সঙ্গে অনূর্ধ্ব ১৯ বয়স থেকে আমার সঙ্গে আলাপ। এনসিএ-তে সেই সময় চান্দু স্যর আমার কোচ ছিলেন। ওঁর বেস্ট স্টুডেন্ট ছিলাম। তাই ওঁর প্রতি আলাদা সম্মান তো থাকবেই। 

প্রশ্ন: আচ্ছা এমন সম্মানীয় কোচের বিরুদ্ধে তো এটা বদলারও ম্যাচ? 

মনোজ তিওয়ারি: অবশ্যই বদলার ম্যাচ। আমি তো সেভাবেই এই ম্যাচটা দেখছি। গতবার শতরান করলেও, আমি অধিনায়ক ছিলাম। তবে এবার অধিনায়ক হিসেবে আমি চান্দু স্যরের দলকে হারিয়ে ফাইনালে যেতে চাই। 

আরও পড়ুন: Cheteshwar Pujara, Border-Gavaskar Trophy 2023: অভিজ্ঞ পূজারার বদলে আনকোরা সূর্যে ভরসা! প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচকের টুইট ঘরে তীব্র চাঞ্চল্য!

আরও পড়ুন: Border-Gavaskar Trophy 2023: শুকনো পিচে অস্ট্রেলিয়াও নামছে তিন স্পিনারে, চোটের জন্য নাগপুরে নেই গ্রিন

প্রশ্ন: বাংলা নক আউট পর্ব কিংবা কঠিন ম্যাচ খেলতে নামলেই, বিপক্ষের বড় নাম নিয়ে বড্ড আলোচনা হয়। এবার সেটা বন্ধ হওয়ার সময় এসেছে বলে মনে হয়? 

মনোজ তিওয়ারি: কয়েক বছর আগেও বাংলা দলকে নিয়ে এভাবে আলোচনা হত। সেটাই আমি-আপনি সবাই জানি। তবে আমরা নিজেরাই কিন্তু বছরের পর বছর ধরে পারফর্ম করে এই মিথ ভেঙে দিয়েছি। এই যেমন শাহবাজ ইদানীং ভারতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করছে। ও কিন্তু ভারতীয় দল থেকে আমাদের কাছে এলেই বলে যে, বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের ড্রেসিংরুমেও আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে ইতিবাচক কথাবার্তা হয়। আর তাছাড়া কে আমাদের সম্পর্কে কী ভাবল, তাতে আমাদের দলের কিছু যায় আসে না। আমাদের পারফরম্যান্স আমাদের হয়ে কথা বলছে। 

প্রশ্ন: আপনি কি নিজেও এভাবেই চিন্তা করেন? নাকি বিপক্ষের বড় নামগুলো সত্যি ভাবিয়ে তোলে? 

মনোজ তিওয়ারি: চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কঠিন দলগুলোকে তো হারাতেই হবে। পারফর্ম করা প্রথমসারির ক্রিকেটারই তো বড় ও কঠিন দলে খেলবে। সেই নিয়মে বিপক্ষের কাছে আবেশ খান, কুমার কার্তিকেয়, রজত পতিদার, আদিত্য শ্রীবাস্তব থাকলে আমাদের কাছেও তো অনুষ্টুপ মজুমদার, আকাশ দীপ, অভিমন্যু ঈশ্বরণ, মুকেশ কুমারদের মতো ক্রিকেটার রয়েছে। যারা ফর্মে থাকলে ম্যাচের রঙ্গ একা বদলে দিতে পারে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মধ্যপ্রদেশের থেকে আমাদের দলে ম্যাচ উইনার অনেক বেশি।  

প্রশ্ন: গত দুই ম্যাচে আপনি ও অনুষ্টুপ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। সেমি ফাইনালে আপনাদের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। চাপ অনুভব করছেন? 

মনোজ তিওয়ারি: গত কয়েকদিন ধরে এই বিষয় নিয়েই অনুষ্টুপের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। আমরা দুজনেই কিন্তু ছন্দে আছি। সেটা এবারের পরিসংখ্যানের দিকে চোখ রাখলেই দেখতে পারবেন। আমিও চাই, এমন বড় ম্যাচে আমাদের দুই অভিজ্ঞের ব্যাট থেকে বড় রান আসুক। সেটাই আমাদের দু’জনের লক্ষ্য। 

প্রশ্ন: বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অধিনায়কের কোনও বিশেষ বার্তা? 

মনোজ তিওয়ারি: আমাদের জন্য দয়াকরে প্রার্থনা করুন। আমরা মাঠে ১০০% উজার করে দেব। পুরো রঞ্জি মরসুম জুড়ে আমরা ভালো পারফরম্যান্স করেছি। আর মাত্র দুটি ধাপ। আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)