আমাদের রোজকার ছোটখাটো অভ্যাসের সঙ্গেই স্বাস্থ্য জড়িয়ে। অথচ এই অতি সাধারণ বিষয়গুলিই আমরা অবহেলা করি। কিছু এমন খারাপ অভ্যাস তৈরি হয়, যা সময়ের সঙ্গে বড়সড় স্বাস্থ্যগত ক্ষতি করতে পারে। হায়দরাবাদের চিকিত্সক ডঃ সুধীর কুমারের এক সাম্প্রতিক টুইটার থ্রেড যেন সেই কথাই আরও একবার মনে করিয়ে দেবে। ডিজিটাল যুগে কতটা সহজেই কারও চোখের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে, তা মনে করিয়ে দিলেন চিকিত্সক।
টুইটার থ্রেডে, ডঃ সুধীর জানিয়েছেন, এক যুবতী প্রায় দেড় বছর ধরে অন্ধকারে বসে ফোনে অনেকক্ষণ সময় কাটাতেন। আর তার ফলে ৩০ বছরের ওই যুবতী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। মঞ্জু নামে ওই যুবতী মাঝে মাঝে যেন চোখে কিছু ভাসতে দেখতেন। সেই সঙ্গে তীব্র আলোর ঝলকানি, অন্ধকারে জিগজ্যাগ প্যাটার্ন এবং মাঝে মাঝে দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন। কোনও বস্তুর দিকে এক নাগাড়ে তাকাতে পারছেন না তিনি। বিশেষত রাতে ঘুম থেকে উঠে তিনি হঠাত্ কিছুই দেখতে পারছিলেনন না।
তাঁর দৈন্যন্দিন অভ্যাস জানতে গিয়েই কারণ বুঝতে পারেন চিকিত্সক। স্মার্টফোন ভিশন সিন্ড্রোমে (SVS) ভুগছেন ওই যুবতী। তিনি জানিয়েছেন, কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের মতো ডিভাইস নিয়মিত অনেকটা সময় জুড়ে ব্যবহার করলে তার থেকে চোখের দীর্ঘমেয়াদী অক্ষমতার সৃষ্টি হতে পারে। একে ‘কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম’ বা ‘ডিজিটাল ভিশন সিন্ড্রোম’ বলা হয়।
তিনি জানান, রোগী নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে অন্ধকার ঘরে তিনি নিয়মিত অনেকটা সময় ধরে ফোন ঘাঁটতেন। এটা বোঝার পরেই তিনি আর কোনও টেস্টের দিকে যাননি। এমনকি কোনও ওষুধও লেখেননি। খালি একটাই পরামর্শ দেন, ‘স্মার্টফোন ব্যবহার করা আপাতত একেবারে কমিয়ে দিন।’
চিকিত্সক জানান, এরপর প্রায় ১ মাস পরে মঞ্জু ফের তাঁর চেম্বারে আসেন। এই এক মাস তিনি যতটা সম্ভব কম স্মার্টফোন ব্যবহার করেছিলেন। আর তাতেই তাঁর এই দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত সমস্যা কেটে গিয়েছে। ফলে স্মার্টফোন থেকেই যে এই সমস্যা হয়েছে, তাই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এখনকার দিনে বহু মানুষই পেশা বা নেশার তাগিদে দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন/কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকেন। তাঁদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ:
১. ঘর অন্ধকার করে স্ক্রিন দেখবেন না। ঘরে যেন ‘অ্যাম্বিয়েন্ট’ লাইট থাকে।
২. এখনকার প্রায় সব স্মার্টফোন/কম্পিউটারেই ‘ব্লু লাইট ফিলটার’ অপশনটি থাকে। সেটি অবশ্যই অন করে রাখুন।
৩. ভাল মানের ব্লু লাইট ফিল্টার চশমা ব্যবহার করুন।
৪. কম্পিউটারে কাজ করলে ৩০ মিনিট অন্তর ৪-৫ মিনিটের বিরতি নিন। সেই সময়ে সম্ভব হলে জানলা বা বারান্দা দিয়ে দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকুন।
৫. চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে কোনও ভাল আই ড্রপ ব্যবহার করুন।
৬. পর্যাপ্ত পরিমাণে টাটকা ফল, শাকসবজি, মাছ, মাংস খান।
আরও পড়ুন: Medical Bills: বিল না মেটালেও দেহ আটকে রাখা যাবে না রাজ্যের নার্সিংহোমে: কমিশন
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup