পদযাত্রা কর্মসূচিতে অস্ত্র হাতে বিএনপি কর্মী

গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের বরমী বাজারে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পিস্তল উঁচিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়েছেন এক বিএনপি কর্মী। 

এরই মধ্যে পিস্তল হাতে থাকা ওই যুবকের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরমী বাজারে এ হামলা ও পিস্তল উঁচিয়ে ধরার ঘটনা ঘটে। 

দুই দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা জানা গেছে, অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে থাকা ওই যুবকের নাম জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (২৪)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন সাদুয়া গ্রামের মীর সাইদুর রহমানের ছেলে। বরমী গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে আবদুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে স্নাতকে পড়াশোনা ও বিএনপির রাজনীতি করেন। তবে তার কোনও পদ-পদবি নেই।

তার সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম মাস্টার বলেন, ‘জাহিদ বিএনপি কর্মী নয়, সে বহিরাগত। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় বরমী বাজারে পদযাত্রা বের করেন বরমী ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় হামলা চালান। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।’

এ বিষয়ে বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বিএনপির পদযাত্রায় অস্ত্রসহ জাহিদ অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দিয়েছে। শ্রীপুরে বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনে তার কোনও পদ নেই। তবে বরমী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আজ দলের কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপি যে হামলার অভিযোগ তুলেছে, তা অসত্য। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনও নেতাকর্মী বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা করেনি। বিএনপি পদযাত্রার নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছিল।’

ওই যুবক আমাদের দলের নয় জানিয়ে জেলা বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও বরমী এলাকার বাসিন্দা মাসুদ সরকার বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরমী বাজারে বরমী ইউনিয়ন বিএনপির পদযাত্রা চলছিল। কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে হঠাৎ বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ১০-১২ জন নেতাকর্মী এসে আমাদের ওপর হামলা চালান।’

তবে বিএনপি অস্ত্রের মহড়া দিয়ে আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আমজাদ পন্ডিত বলেন, ‘আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে চেয়ারে বসেছিলাম। আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ে আসছিলেন। এ সময় বিএনপির প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালান। সেইসঙ্গে তাদের কর্মী জাহিদ পিস্তল বের করে আমাদের গুলি করার হুমকি দেন। পরে নেতাকর্মীরা তাকে প্রতিহতের চেষ্টা করেন। এর ফাঁকে বিএনপি নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করেন।’

বরমী ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি মিমি সরকার বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। আহতরা স্থানীয় ক্লিনিক ও ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির পদযাত্রায় একজনকে পিস্তল নিয়ে মিছিল করতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় এখনও অভিযোগ পাইনি। তবে পিস্তল উঁচিয়ে ধরা যুবককে খুঁজছি আমরা।’