দাদার জায়গায় ক্লাস নেন বোন, মায়ের বদলে প্রক্সি ছেলের, আজব কাণ্ড ডুয়ার্সের স্কুলে

কলেজের ক্লাসে প্রক্সি দেওয়ার কথা শুনেছেন? কিন্তু কর্মক্ষেত্রে কোনওদিন প্রক্সি দেওয়ার কথা শুনেছেন? সেটাও আবার শিক্ষকতার ক্ষেত্রে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তেমনই অভিযোগ উঠেছে। ডুয়ার্সের গয়েরকাটার একটি সরকার পোষিত স্কুলে দেখা যাচ্ছে, মায়ের বদলে ছেলে ও দাদার বদলে ক্লাস নিচ্ছেন বোন। অভিযোগ উঠেছে দিনের পর দিন স্কুলে আসেন না মা। তার বদলে ছেলে স্কুলে এসে দিনের পর দিন ধরে ক্লাস নিচ্ছেন। ডুয়ার্সের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই অভিযোগকে ঘিরে ইতিমধ্য়েই নানা চর্চা শুরু হয়েছে।

কিন্তু সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি এইভাবে শিক্ষকরা প্রক্সি দিতে পারেন? যিনি শিক্ষক তাঁর বদলে কি অন্য় কোনও প্রিয়জন ক্লাস নিতে পারেন?

সূত্রের খবর, ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের পূর্ব গয়েরকাটা এলাকায় অ্যাডিশনাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত কয়েকমাস ধরেই দুজন শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। তবে তাঁদের জায়গায় অবশ্য অপর দুজন ক্লাস নিচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে এই স্কুলে প্যারা টিচার মণি পাল বোস। তিনি অনেকদিন ধরেই ক্লাস নিতে আসছেন না। তাঁর জায়গায় ক্লাসে আসছেন তাঁরই ছেলে প্রীতম বোস। অভিযোগ এমনটাই। অন্যদিকে অপর এক শিক্ষক সুদীপ্ত কুমার দের স্কুলে আসার কথা।তবে তিনি স্কুলে গরহাজির থাকেন। তবে তাঁর হয়ে প্রক্সি দেন তাঁরই বোন।

এদিকে এভাবে প্রক্সিতে স্কুলে এসে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন দুই ভুয়ো শিক্ষক। প্রীতম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মা চাকরি করেন এই স্কুলে। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় তার জায়গায় আমি ক্লাস নিচ্ছি। এসআই লিখিতভাবে এই অনুমতি দিয়েছেন। তাই ক্লাস করাচ্ছি।

অপর ভুয়ো শিক্ষিকা রূপা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, দাদা বছর চারেক ধরে অসুস্থ। দাদা আসতে পারেন না। তাই আমি ক্লাস নিচ্ছি।

কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, এভাবে কি অপরের জায়গায় ক্লাসে এসে শিক্ষকতা করা যায়? এনিয়ে শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এভাবে অপরের হয়ে স্কুলে শিক্ষকতা করা যায় না। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ এনিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির দাবি, গোটা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থারই এই হাল। তৃণমূলের দাবি, বিজেপির পঞ্চায়েত। তারাই বলতে পারবেন।

তবে এসবকে অবশ্য পাত্তা দিতে রাজি নন ভুয়ো শিক্ষকের দল। বলা ভালো প্রক্সি শিক্ষকরা।