George Soros Comment on Adani: আদানি সাম্রাজ্যের পতনেই ভারতে গণতন্ত্রের নবজাগরণ হবে: মার্কিন ধনকুবেরের মন্তব্যে বিতর্ক

গৌতম আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে পতন। আর এর থেকেই ভারতের ‘গণতান্ত্রিক পুনরুজ্জীবনে’র সূচনা হতে পারে। এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন মার্কিন বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী জর্জ সোরোস। তিনি জাবি করেন, আদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে ভারতীয় শেয়ার বাজারে ঝড় উঠেছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসাবে ভারতের প্রতি আস্থা টলিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা।

মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের পর ধস নামে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। এর প্রভাবে আগামিদিনে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ভারতে টাকা ঢালার বিষয়ে ভরসা কমতে পারে বলে দাবি করছেন অনেকে। একইসঙ্গে দেশের বাজার নিয়ন্ত্রকদের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এমনতি গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক নিয়েও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। আরও পড়ুন: ‘মোদীর আশীর্বাদধন্য’ আদানিকে নিয়ে তদন্ত হোক, আরবিআই ও সেবি-র কাছে আবেদন কংগ্রেসের

আর এরই মধ্যে এই বিষয়ে বিতর্ক আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দিলেন মার্কিন ধনকুবের। মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের আগে এক বক্তৃতায় জর্জ সোরোস বলেন, ‘মোদী এই বিষয়ে নীরব রয়েছেন। কিন্তু তাঁকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এবং সংসদে তোলা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এই ঘটনার ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উপর মোদীর প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারেরও সূচনা হবে। আমি ভুলও হতে পারি, কিন্তু আমি আশা করব, এর থেকে ভারতের গণতন্ত্রে একটি নবজাগরণের শুরু হবে।’

দুঁদে বিনিয়োগকারী জর্জ সোরোসের মোট সম্পদ প্রায় $৮.৫ বিলিয়ন। এর পাশাপাশি সামাজিক কাজ হিসাবে গণতন্দ্র ও বাকস্বাধীনতার প্রচার করেন। ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনে’র প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা এবং বাকস্বাধীনতার প্রচার করেন। শুধু তাই নয়, এই জাতীয় বিষয় নিয়ে কাজ করে, এমন গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিদের আর্থিক অনুদান দেয় তাঁর এই সংস্থা।

গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার কারচুপি, বিপুল অঙ্কের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগে বলা হয়,

  • আদানি গোষ্ঠী বেনামে বিদেশে ‘শেল’ কোম্পানি খুলেছে। আর তার মাধ্যমে ভারতে নিজেদের কোম্পানিরই শেয়ার বেনামে কিনেছে। এদিকে কোনও শেয়ার যত বেশি কেনা হয়, তত তার দাম বাড়ে। এভাবে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের চাহিদা ও দাম বৃদ্ধির অভিযোগ তোলা হয়েছে।
  • হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই অতিমূল্যায়নের শেয়ারে আরও বিনিয়োগ করেছে LIC, SBI-এর মতো সংস্থা। ফলে আরও দ্রুত হারে সেই শেয়ারগুলির দাম বেড়েছে।
  • এবার সেই বিপুল দামের শেয়ার বন্ধক রেখে সরকারি ব্যাঙ্কের সমষ্টি থেকে প্রচুর ঋণ তুলেছে আদানি গোষ্ঠী। ফ

এরপর থেকে ক্রমেই নিম্নমুখী হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর। আদানি গোষ্ঠী বারবার এই রিপোর্ট ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছে। তবে তাতে লাভ হয়নি। দ্রুত হারে নিম্নমুখী হয়েছে সংস্থার স্টক ও বন্ডের দাম। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, আদানি এন্টারপ্রাইজের FPO-ও ভেস্তে যায়। গত মাসের শেষে FPO-র মাধ্যমে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা তোলার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দৌলতে, সেই FPO সম্পূর্ণ সাবস্ক্রাইবডও হয়ে যায়। তবে টালমাটাল বাজার পরিস্থিতিতে FPO বাতিল করে দেয় আদানি এন্টারপ্রাইজের বোর্ড। সমস্ত বিনিয়োগকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানায় সংস্থা।

হিসাব অনুযায়ী, এই রিপোর্টের পর থেকে এখনও পর্যন্ত শেয়ার বাজার থেকে প্রায় ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মূলধন খুইয়েছে আদানি গোষ্ঠী। আরও পড়ুন: নিম্নমুখী শেয়ারের পরিস্থিতি ‘সাময়িক’, দাবি করলেন গৌতম আদানি

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup