ফের জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত পাকিস্তান। এবার সন্ত্রাসবাদীদের নিশানায় ছিল করাচির পুলিশ দফতর। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে একদল জঙ্গি হামলা চালায় করাচির পুলিশ প্রধানের দফতরে। করাচির শরিয়া ফয়জালে অবস্থিত পুলিশ দফতরে হামলার নেপথ্যে ৩ জন জঙ্গি জড়িত ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে হামলার জবাব দেওয়া হয় পুলিশের তরফেও। জবাবি গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছে বেশ কয়েকজন জঙ্গি। গোটা ঘটনায় সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৭ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে পাঁচজন জঙ্গি, এবং অন্তত ১ জন পুলিশকর্মী আছে। আহত হয়েছেন ১০ জন। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালিবান গোষ্ঠী।
পাক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ জঙ্গিরা করাচির শীর্ষ পুলিশ কর্তার দফতরে ঢুকে পড়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। এর পালটা জবাব দেয় পুলিশও। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল হামলায় ৮ থেকে ১০ জন জঙ্গি জড়িত। তবে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, হামলা চালিয়েছিল পাঁচ জঙ্গি। এবং তাদের সকলকেই নিকেশ করা হয়েছে। করাচির পুলিশ প্রধান জাভেদ ওধো টুইট করে ঘটনার বিষয়ে জানান। জানা গিয়েছে, এদিন প্রথমে হ্যান্ড গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। এরপর চারতলা সেই পুলিশ দফতরে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। পরে প্যারামিলিটারি রেঞ্জার্স ও পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, যেসময় ওই হামলা চালানো হয় তখন সেখানে পুলিশের বেশ কয়েকজন আধিকারিক ছিলেন। তবে কোনও শীর্ষ কর্তা এই টনায় জখম হয়েছেন বা মারা গিয়েছেন বলে খবর নেই। ঘটনার পরই ঘটনাস্থল সংলগ্ন সমস্ত রাস্তা জনসাধারণের বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেখানে পাঠানো হয় আরও বেশি সংখ্যক বাহিনী।
সিন্ধ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। জড়িত জঙ্গিদের এই হামলার জন্য কঠোর শাস্তি দেওযার কথা জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সেদেশের তালিবানি সংগঠনের যুদ্ধবিরতি শেষ হয়েছে। এরপর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এই জঙ্গি সংগঠনটি। জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখে পেশোয়ারের একটি মসজিদে প্রার্থনা চলাকালীন আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল এই জঙ্গি সংগঠনটি। সেই ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১০০ জনের। এদিকে পাকিস্তান এই মুহূর্তে চরং অর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে। এর মধ্যে ক্রমাগত এই জঙ্গি হামলার জেরে মাথায় হাত পড়েছে সেদেশের সরকারের।