চ্যাটবটের প্রতিযোগিতায় জিতবে কে?

সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি নামের ওপেন এআই বা উন্মুক্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন চ্যাটবট তৈরি করে আলোচনার ঝড় তুলেছে মাইক্রোসফট। প্রতিযোগিতায় গুগল নিয়ে এসেছে বার্ড নামে নতুন আরেকটি এআই চ্যাটবট। এখন প্রশ্ন হলো, দুই টেক জায়ান্টের মধ্যে এই নতুন লড়াইয়ে জিতবে কে?

তবে মাইক্রোসফটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে শুরুতেই মোটা অঙ্কের মাশুল গুনতে হয়েছে গুগলকে। বার্ড’র ডেমো ভার্সনকে সামনে এনে শুরুতেই বিপত্তির সম্মুখীন হয় গুগল। প্রথম দিনেই টেলিস্কোপ নিয়ে একটি প্রশ্নের ভুল উত্তর দেওয়ায় ১৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি জরিমানা গুনতে হয়েছে গুগলকে।

প্রশ্নটি ছিল— জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ নিয়ে। টেলিস্কোপটি তৈরিতে খরচ হয়েছিল যেখানে ১০ বিলিয়ন ডলার, সেখানে এটি সম্পর্কে ভুল উত্তর দিয়ে বার্ড’কে গুনতে হলো ১৬০ বিলিয়ন ডলারেরও অধিক জরিমানা।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, চ্যাটজিপিটিও ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। টেলিস্কোপ নিয়ে চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করা করা হলে বিশেষজ্ঞ ও বিনিয়োগকারীদের খুব একটা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি মাইক্রোসফটের এই চ্যাটবট।

চ্যাটজিপিটির সার্চ ইঞ্জিন ও ব্রাউজারকে আরও উন্নত করতে সান ফ্রান্সিস্কো-ভিত্তিক কোম্পানি ‘ওপেন এআই’’ এর প্রযুক্তি ব্যবহার করার কথা জানায় মাইক্রোসফট। এতে ব্যবহারকারীদের আরও প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে তা।

ওপেন এআই’য়ের সঙ্গে মাইক্রোসফটের এই চুক্তি সম্পর্কে জানার পরে গুগলও চুপচাপ বসে নেই। গুগল জানায়— কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে বার্ড খুব শিগগিরই আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এবং জনসাধারণের জন্য এটি হবে সহজে ব্যবহারযোগ্য।

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই বলেন, ‘পিয়ানো হোক কিংবা গিটার, যেকোনও কিছু বার্ডের মাধ্যমে সহজেই শিখতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। দ্রুতই গুগলের সার্চ ইঞ্জিনেও বার্ডে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নিয়ে আসা হবে। তবে দুর্ভাগ্যবশত, এসব ছাড়িয়ে টেলিস্কোপের বিষয়ে ভুলের ব্যাপারটিই বেশি আলোচনায় এসেছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্ড ও চ্যাটজিপিটি উভয়ের ক্ষেত্রেই যথেষ্ট পরিমাণে ভুলের আশঙ্কা রয়েছে। পদ্ধতিগত কারণেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এসব চ্যাটবট ত্রুটিপ্রবণ।

মার্কিন আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভেস বলেছেন, গত সপ্তাহ ছিল মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার জন্য বড় সাফল্যময়। কিন্তু গুগলের প্যারিসের আয়োজন এবং বার্ড’র ব্যর্থতায় কোম্পানিটি জবাবের চেয়ে আরও বেশি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘শুরুতে মনে হচ্ছে মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে গুগল এবং এটির প্রভাব পড়েছে কোম্পানিটির ওপর।’