Bidyut Chakraborty: ‘‌শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক–প্রাক্তনীরা অশিক্ষিত’‌, বিশ্বভারতীতে বিদ্যুৎ বিস্ফোরণ

অমর্ত্য সেন–বিশ্বভারতী সমস্যা এখনও মেটেনি। নোবেল অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আক্রমণ এখনও সবার মনে টাটকা। সেখানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের প্রাক্কালে আবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন উপাচার্য। যা নিয়ে এখন নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এবার সরাসরি আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীদের আক্রমণ করেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এমনকী আশ্রমিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি।

ঠিক কী বলেছেন উপাচার্য?‌ কিছুদিন আগে অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরষ্কার পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তা নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। আজ, বুধবার শান্তিনিকেতনের মন্দিরে সাপ্তাহিক উপাসনা ছিল। সেখানে এসে উপাচার্য সরাসরি আক্রমণ করে সুরে বলেন, ‘‌শান্তিনিকেতনের রাবীন্দ্রিক, আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা অশিক্ষিত এবং অল্প শিক্ষিত। বিশ্বভারতীকে কুলষিত করছেন এই সব ব্যক্তিরা।’‌ এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই মন্তব্যের জেরে আবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

কে, কি বলছেন উপাচার্যকে নিয়ে?‌ আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সূত্রের খবর, এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসতে পারেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আর তার প্রাক্কালেই বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এই মন্তব্যে বিতর্ক চরমে উঠেছে। উপাচার্য এদিন কটাক্ষ করেন, প্রাক্তনী, আশ্রমিকরা হলেন বুড়ো খোকা। বুড়ো বয়সে ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। তাঁর দাবি, বিশ্বভারতীর কোনও কাজে এঁদের পাওয়া যায় না। পাল্টা আশ্রমিক অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‌উনি প্রায়ই এই ধরনের মন্তব্য করে আক্রমণ করছেন। ওনাকে নিয়ে আর বলার কিছু নেই।’‌ আশ্রমিক স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘‌বিশ্বভারতীর উপাচার্য যে ধরনের মন্তব্য করছেন তা শুনলে মন খারাপ হয়ে যায়।’‌ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর এবং আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‌আমরা শিক্ষা পায়নি, খারাপ লোক, উনি একমাত্র ভদ্রলোক। কী করা যাবে? খারাপ লাগে এই সব শুনতে।’‌

এদিকে বিশ্বভারতী বনাম অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্কে শোরগোল এখনও অব্যাহত। বিশ্বভারতীর দাবি, অমর্ত্য সেন অবৈধভাবে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে আছেন। এটা তাঁর পৈতৃক ভিটে বলে পাল্টা দাবি অমর্ত্য সেনের। অন্যদিকে এই ঘটনার পর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়িতে এসে জমির নথি দিয়ে যান এবং দাবি করেন ওই জমি অমর্ত্য সেনেরই। অমর্ত্য সেনের পিতা সেই জমি লিজে নিয়েছিলেন, যা সরকারি রেকর্ডে রয়েছে। এই দাবিও মানতে চাননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য।