বহুদিন ধরে চলে আসা প্রথাকে কঠোর নিয়মের আবদ্ধে পালন করতে গিয়ে সময়ের আবর্তনে অচলায়তন বিদ্যায়তনের কোনও পরিবর্তন হয় না। এখানকার বিদ্যার্থীরাও কোনও প্রশ্ন ছাড়াই তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবতীয় নিয়ম ও অনুশাসন মেনে চলে। অচলায়তনের বাইরের জগতের সাথে তাদের যোগাযোগ নেই, এমনকি যোগাযোগ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ প্রকাশ পাওয়াটাও তাদের জন্য ‘মহাপাপ’-এর নামান্তর!
এমনই এক অদ্ভুত বিদ্যালয়ের গল্প রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নাম দিয়েছেন ‘অচলায়তন’। সেটিকে মঞ্চে তুলে ধরছে নাট্যদল প্রাচ্যনাট। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় ও মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন প্রণোদনায় এটি নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম।
২৬ জানুয়ারি নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। এবার নিয়মিত মঞ্চায়নের পালা। তারই সূত্রপাত হচ্ছে সোমবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চ থেকে।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক ভাবনা এমন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তত্ত্বনাটক, প্রতীকী নাটক নিয়ে বড় বড় সমালোচকদের যে অস্পষ্টতার অভিযোগ, সেটি খণ্ডন করে আমাদের ‘অচলায়তন’ মঞ্চায়নের প্রয়াস স্পষ্ট এবং প্রতীকের ব্যবহার যথার্থ রূপে প্রকাশের ইচ্ছা কেবল।’’
আরও বলেন, ‘অচলায়তন বিদ্যাপীঠকে আমরা কল্পনা করেছি একটি বালিকা বা নারী শিক্ষাগৃহ হিসেবে। আদৌ এই বিদ্যায়তনের বা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাস্তব নিরিখে কতটুকু? আবার নিয়মনীতি মন্ত্র বা প্রায়শ্চিত্তে মানবের মুক্তি আছে কি? নাকি এই শিক্ষার আমূল উৎপাটনেই একদিন তৈরি হবে সত্যিকারের শিক্ষা যা মানুষে মানুষে একাত্ম হওয়া, মুক্ত দুনিয়ার স্বপ্নে বিভোর করবে সবাইকে। সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করছেন সানজিদা প্রীতি, শাহানা রহমান সুমি, শাহেদ আলী সুজন, তৌফিকুল ইসলাম ইমন, শাখাওয়াত হোসেন রেজভী, জাহাঙ্গীর আলম, চেতনা রহমান ভাষা প্রমুখ।