‌Baguiati Incident: খাস কলকাতায় এবার কঙ্কালকাণ্ড, বাগুইআটি থেকে উদ্ধার খুলি, গ্রেফতার তিন

কলকাতা শহরে এবার কঙ্কালকাণ্ডের ঘটনা ধরা পড়ল। বাগুইআটির একটি ফ্ল্য়াটে হানা দিতেই চক্ষু চড়কগাছ বন দফতরের। মানুষের মাথার খুলি শহরে মেলায় জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করল বন দফতর। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মানুষের মাথার ৫টি খুলি, হরিণের শিং, চামড়া, বাঘের দাঁত। তন্ত্র সাধানার আড়ালে ওইসব সামগ্রী পাচারের ছক কষা হয়েছিল বলে মনে করছে বন দফতর ও পুলিশ। এই ফ্ল্যাটটি একজন তান্ত্রিকের। দমদম প্রাইভেট রোডের আমবাগান এলাকায় ওই তান্ত্রিকের ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ।

ওই তান্ত্রিকের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর পরিমান বন্য জীবজন্তুর ছাল, অস্থি। বেআইনিভাবে সেগুলি রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। নাগেরবাজার থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই বুধবার রাতে তল্লাশি শুরু করে বন দফতর। তখনই উদ্ধার হয় সাদা ও কালো হরিণের ছাল, বাঘের নখ ও দাঁত, মানুষের মাথার খুলি এবং একাধিক পাখির দেহাংশ। যে ঘরটি থেকে ওইসব সামগ্রী মিলেছে সেটিকে দেখে পুলিশের অনুমান, সেখানে তন্ত্রসাধনা হতো। আর তার আড়ালে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল। যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন জ্যোতিষী।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ফ্ল্যাটে হানা দেওয়ার পর, মানুষের মাথার খুলি কোথা থেকে এল সেটা বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। বন দফতর জানার চেষ্টা করছে, পশুপাখির দেহাংশ অভিযুক্তরা জোগাড় করল কোথা থেকে। মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী। তাকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। জ্যোতিষ ও তন্ত্র সাধনার নামে বেআইনি দ্রব্য পাচারের অভিযোগে মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল—রাখাল চৌধুরী, দুলাল অধিকারী এবং অরিজিৎ গুপ্ত। সৌরভের বাবা রাখাল চৌধুরীর নামে এই বাড়ি।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘ ৪০ বছরের ধরে এখানে বসবাস করে অভিযুক্তরা। পাড়ায় মেলামেশা করত না ওই বাড়ির কোনও সদস্য। বাড়িতে তন্ত্রসাধনা চলত। সৌরভের স্ত্রী মিঠু চৌধুরী বিষয়টি পুলিশ ও তার আইনজীবীকে জানাতে পর্দাফাঁস হয়। রাখাল চৌধুরীর বাড়ি ছাড়াও দুলাল অধিকারীর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে বন্য জীবজন্তুর চামড়া। ধৃতরা চোরাচালান কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশ মনে করছে। সৌরভের স্ত্রী মিঠু চৌধুরী থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে পুলিশকে জানান, বাড়িতে তাঁর স্বামী হরিণের শিং, চামড়া, বাঘের নখ মজুত করেছে। ওই খবর পেয়েই ডিএফও’‌র নেতৃত্বে বন দফতর ও পুলিশ একসঙ্গে ফ্ল্যাটে হানা দেয়। এই ঘটনা নিয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‌আমাকে একজন ফোন করে বলেন, বন্যপ্রাণী সম্পর্কে কিছু জিনিস একটি ফ্ল্যাটে রয়েছে। যা রাখা নিষিদ্ধ। ওই খবরের ভিত্তিতে বন দফতর হানা দেয়।’‌