২৪ ঘণ্টায়ও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি সীতাকুণ্ডের আগুন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এসএল গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স কারখানার তুলার গুদামে লাগা আগুন এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিটের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মোট ২৩টি ইউনিট। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও বিজিবির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রবিবার সকাল ৭টায় আগুন নিভেছে। এরপরও কিছু জায়গা থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এ কারণে এখনও আগুন নেভানোর কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করেনি ফায়ার সার্ভিস।’

তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ইউনিটেক্স কারখানার গুদামে দুই হাজার ৭শ’ টন তুলা ছিল। তুলার পরিমাণ বেশি হওয়ায় এক অংশে আগুন নির্বাপণ করার পর সেটা স্তুপ হয়ে কিছুক্ষণ পরে আবার স্তুপের নিচ থেকে আগুন আরেক অংশে ছড়িয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায় ১০ একর আয়তনের এ গুদামের চারদিকের দেয়াল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে চতুর্দিক থেকে ফায়ার টেন্ডার (পানি ছড়ানোর মেশিন) প্রবেশ করানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর চার, নৌবাহিনীর চার, বিমান বাহিনীর দুই এবং বিজিবির চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিটসহ সর্বমোট ২৩টি ইউনিট কাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থলে অগ্নি নির্বাপণে পানি ব্যতীত অন্য কোনও রাসায়নিক বা পাউডার ব্যবহার করার উপায় ছিল না। এমনকি এতো বিপুল পরিমাণ পানির উৎস আশেপাশে পাওয়া যায়নি। যার কারণে অনেক দূর থেকে ক্যান্টনমেন্ট, ভাটিয়ারি, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে পানির যোগান দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশের খাল, পুকুর ও রিজার্ভারের পানি প্রায় শেষ হয়ে গেছে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন নিভে গেলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কাজ চলছে।’ 

শনিবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট কুমিরা এলাকার ওই তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘আশপাশের পুকুর ও খালে অল্প পরিমাণ পানি ছিল। পাম্প লাগানোর কিছুক্ষণের মধ্যে পানি কমে এলে স্থানীয়রা মাছ ধরতে নেমে যান। এতে পানি ঘোলা হয়ে যায়। পরে একাধিক স্থান থেকে পানি আনা হয়।’ 

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে এসএল গ্রুপের গুদামটিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়েল্ডিংয়ের স্ফূলিঙ্গ থেকেই আগুন লেগেছে।’ 

এর আগে, গত ৪ মার্চ বিকালে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাত জন নিহত হন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।