BJP: বুথ প্রতি তিনজন প্রার্থীর নাম পাঠাতে হবে, রাজ্য বিজেপির নির্দেশে চাপে জেলা নেতৃত্ব

রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব বুথে প্রার্থী দেওয়া যাবে কি না সেটা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে বিজেপি। তারপরেও গেরুয়া শিবিরের ঢক্কানিনাদে কোনও খামতি দেখা যাচ্ছে না। কারণ রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রত্যেক মণ্ডল কমিটিকে বলা হয়েছে, একেকটি বুথ থেকে সর্বাধিক তিনটি করে নাম প্রার্থী হিসেবে বিজেপির জেলা কমিটিগুলিকে পাঠাতেই হবে। দলের অন্দরের খবর, আর এই নেতৃত্বের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বঙ্গ–বিজেপির মণ্ডলস্তরের নেতাদের।

আসলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাপ দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বকে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই চাপ এবার নেমেছে নীচুতলায়। জেলা নেতৃত্বকে নাম পাঠাবে দলের মণ্ডল স্তরের নেতারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাফ নির্দেশ, প্রত্যেকটি বুথ থেকে ন্যূনতম তিনজনের নাম পাঠাতে হবে প্রার্থী হওয়ার জন্য। আর এই নির্দেশটা মানতেই এখন নাভিশ্বাস উঠছে মণ্ডলস্তরের নেতাদের। কারণ বাংলার বহু বুথে বিজেপির একজন সদস্যও নেই। সেখানে প্রতি বুথ থেকে কেমন করে তিনটি নাম পাঠানো যাবে তা নিয়েই মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের।

এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে পার্টির নড়বড়ে সংগঠনের কথা সাফ অস্বীকার করছেন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা। বরং তাঁদের দাবি, এবার রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিটি বুথে যোগ্য প্রার্থী দিতে দলের কোনও সমস্যাই হবে না। উলটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেষ্ট ভাল ফল করবে বিজেপি। যদিও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই দাবিকে কেন্দ্র করে সংশয় রয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেই। বঙ্গ– বিজেপির নেতৃত্বের এমন দাবিদাওয়া শুনে দলেরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের পাল্টা চাপে ফেলে দিয়েছেন। তাই তাঁরা বুথ প্রতি তিনজনের নাম পাঠাতে বলেছেন। কারণ এই নির্দেশ পালন হচ্ছে কেমন করে সেটা দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে বাংলার জেলায়, ব্লকে, বুথে বিজেপির সংগঠন ঠিক কোন অবস্থায় রয়েছে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে রাজ্যজুড়েই দলের সংগঠনে ধস নেমেছে। যা অবস্থা তাতে সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের সব বুথে বিজেপি আদৌ আসন ধরে ধরে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়। অর্ধেক আসনেও প্রার্থী দিতে পারবে কিনা সন্দেহ। বহু জায়গাতেই গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর থেকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী তুলে আনা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের অন্দরেই। বিজেপি এখন জেলায় জেলায় বুথ সশক্তিকরণ অভিযান চালাচ্ছে। তাতেও কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ দলের বহু পুরনো কর্মী এখনও সেভাবে মাঠেই নামেননি। তাঁরা কার্যত বসে রয়েছেন। ফলে বুথস্তর থেকে শুরু করে মণ্ডল এবং জেলাস্তরেও কার্যত একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস জেলায় জেলায় দিদি দূত, দিদি সুরক্ষা কবচ, অঞ্চলে একদিন –সহ একাধিক কর্মসূচি চালাচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একেবারে গ্রামস্তরে পৌঁছে নিয়মিত জনসংযোগ কর্মসূচি করছে। সেখানে বিজেপিকে সেভাবে মাঠে ময়দানে দেখাই যাচ্ছে না।