উন্নয়নের নামে সরকার কাছের লোকদের উন্নয়ন করেছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বর্তমান সরকার সবসময় উন্নয়নের কথা বলে। সরকার উন্নয়নের নামে তাদের কাছের লোকদের উন্নয়ন করেছে, কৃষক-শ্রমিকদের উন্নয়ন হয়নি৷

শনিবার (১৮ মার্চ) রংপুর সেন্ট্রাল রোড ঈদগাহ ময়দানে ‘কৃষি জমি, ফসলের বাজার ও রাষ্ট্রের ওপর কৃষক মজুরের নিয়ন্ত্রণ কায়েমে ঐক্যবদ্ধ হোন’ শীর্ষক আহ্বান নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি’র ১ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

উদ্বোধনী সমাবেশে প্রবীণ কৃষক নেতা নাজার আহমেদ গ্রামতালি ও ফিরোজ আহসানকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, পাকিস্তানিদের জুলুমের কবল থেকে মুক্তি পেতেই মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে বাংলার কৃষক-মজুর গ্রামে গ্রামে বীরত্বপূর্ণ লড়াই গড়ে তুলছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে আমাদের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছিল। কিন্তু আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রে কৃষক তার কোনও অধিকার পায় না, ধানের উৎপাদন খরচ তুলতে পারে না, বাজারে মূল্য নির্ধারণে তাদের কোনও ভূমিকা নেই। সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে লক্ষ-কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয় অথচ ব্যাংকের মিথ্যা মামলায় কৃষকের কোমরে দড়ি দিয়ে জেলে নেওয়া হয়।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, “বর্তমান সরকার সবসময় উন্নয়নের কথা বলে। সরকার উন্নয়নের নামে তাদের কাছের লোকদের উন্নয়ন করেছে। আমাদের যারা খাবারের জোগান দেন, দেশের অর্থনীতি সচল রাখেন সেই কৃষক শ্রমিকদের উন্নয়ন হয়নি৷ উন্নয়নের নাম করে সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশের মানুষকে প্রজায় পরিণত করেছে।

সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, উৎপাদক কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পান না, এমন কি উৎপাদন খরচও ওঠে না। অথচ ফরিয়া-সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীগোষ্ঠী এই ফসলই এমন দামে বাজারে বিক্রি করে যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস ওঠে। সরকার এর কোনও নিয়ন্ত্রণ করে না, কেননা সরকার নিজেই এর ভাগ-বাটোয়ারার অংশীদার। পুরো বাজার ব্যবস্থায় কৃষকের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা না হলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কোনও মুক্তি আসবে না।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রবীণ কৃষক নেতা নাজার আহমেদ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া ও দীপক রায়, তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ কৃষক নেতা আমজাদ হোসেন, আব্দুর রশিদ, শামসুল আলম,  মাহমুদা বেগম, রুবিনা আহমেদসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন সম্মেলন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক, গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান এবং আলিম কবীর।