‘আব্বুর মুখ ঢাকা কেন আম্মু? আব্বু কই গেছে?’

পাঁচ বছরের শিশু তাসমিম। মা জোনাকি বেগমের সঙ্গে শিবচর উপজেলা হাসপাতালে এসেছে। মায়ের কোলে বসে কেঁদে কেঁদে সে প্রশ্ন করছে, ‘আব্বু কই গেছে আম্মু? ওখানে অতো মানুষ ক্যা? আব্বুর মুখ ঢাকা কেন আম্মু?’ বাবার লাশ নিতে এসে অবোধ শিশু তাসমিম বুঝতে পারছে না তার বাবা আর কোনোদিন ফিরবে না। মায়ের কান্না দেখে সেও চিৎকার করে কাঁদছে।

তসনিমের বাবা মোস্তাক আহমেদের রবিবার শিবচরের সড়ক দুর্ঘটনার নিহত হন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকায়।

জোনাকি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, সংসারে সচ্ছলতা আনতে কিছু দিনের জন্য শ্রমিক ভিসায় সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তার স্বামী। বিদেশ যেতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট করাতে গোপালগঞ্জের বনগ্রামের বাড়ি থেকে ইমাদ পরিবহনে ঢাকায় যাচ্ছিলেন মোস্তাক। কিন্তু যাওয়া আর হলো না তার!

এ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। লাশ নিতে একে একে তাদের স্বজনরা হাসপাতালে আসছেন। স্বজনদের কান্নায় হাসপাতাল চত্বর ভারী হয়ে উঠেছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিবচরের সব লাশ শনাক্ত করে আত্মীয়-স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানিয়েছেন, নিহতদের স্বজনরা পরিচয় নিশ্চিত করলেই তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করছি।

রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন।