পাকিস্তান সুপার লিগের অষ্টম আসর যে উত্তেজনায় শুরু হয়েছিল, সেই একই উত্তেজনা নিয়ে শেষ হলো। এমনকি ফলও একই। শনিবার ফাইনালে মুলতান সুলতানসের বিপক্ষে ১ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো লাহোর কালান্দার্স।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে শেষ বলে ছয় রান দরকার ছিল মুলতানের। বোলিংয়ে ছিলেন জামান খান, ব্যাটিংয়ে খুশদিল শাহ। ওই বলটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মারেন মুলতানের ব্যাটার, জিতে যায় লাহোর। ফাইনালেও শেষ বল করলেন একই বোলার, ব্যাটিংয়েও একই ব্যাটার। দরকার চার রান। কাউ কর্নার দিয়ে শট খেলে চোখ বন্ধ করে যেন রান নিতে থাকেন খুশদিল ও আব্বাস আফ্রিদি। কিন্তু তৃতীয় রান শেষ করতে পারেননি খুশদিল, নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে শাহীন শাহ আফ্রিদি ও ডেভিড উইজের যোগসাজশে রান আউট। ৮ উইকেটে ১৯৯ রানে থামে মুলতান, গতবারও ফাইনালে লাহোরের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের।
ম্যাচ কিন্তু পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। শেষ ৫ ওভারে ৭ উইকেটে ৬০ রান দরকার ছিল মুলতানের। ১৬তম ওভারে আউট হলেন কিয়েরন পোলার্ড। তিন ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে দরকার ৪১ রান। টিম ডেভিড ও খুশদিল ক্রিজে। ১৮তম ওভারে শাহীন আফ্রিদি হিসাব নিকাশ ওলট পালট করে দিলেন বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে।
দুই ওভারে ৩৫ রান আটকাতে হতো লাহোরকে, জয়সূর্য তখন তাদের দিকে হেলে পড়েছে। কিন্তু ১৯তম ওভারে হারিস রউফ দিয়ে দিলেন ২২ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৩ রান, প্রথম তিন বল শেষে ব্যবধান কমলো ১০ রানে। চতুর্থ বলে বোকামি করে রান আউটের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন বোলার জামান। শেষ ২ বলে লাগবে ৮ রান, খুশদিল চার মেরে ভয় ধরিয়ে দিলেন লাহোরের। শেষ বলে তৃতীয় রান নিয়ে সমতা ফেরাতে পারেনি মুলতান।
অবিশ্বাস্য জয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন লাহোর। বল হাতে চার ওভারে সর্বোচ্চ ৫১ রান দিলেও ৪ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার শাহীন আফ্রিদি। এর আগে ব্যাটিংয়েও ঝড় তোলেন তিনি। মাত্র ১৫ বলে ২ চার ও ৫ ছয়ে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহীন আফ্রিদি। লাহোরের ইনিংসে সেরা পারফরম্যান্স করেন আব্দুল্লাহ শফিক, ৪০ বলে করেন ৬৫ রান। এর আগে মির্জা বেইগের ১৮ বলে ৩০ ভালো শুরু এনে দেয় লাহোরকে।
ফাইনালের ম্যাচসেরা হয়েছেন অধিনায়ক শাহীন আফ্রিদি। মুলতানের ইহসানউল্লাহ ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়।