100 Days Job: কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে দুর্নীতির উল্লেখ নেই, ১২ মাসে বাংলায় ৭১ পর্যবেক্ষক দল

বাংলায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল এলেই প্রধান বিরোধী দল বিজেপি উজ্জীবিত হতো। আর একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হতেন গেরুয়া নেতারা। সেখানে গত একবছরে শুধুমাত্র গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পগুলির কাজ খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছে ৭১টি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। তাদের মূল উদ্দেশ্য—আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে অনিয়ম বা ত্রুটি খুঁজে বের করা। আর সেটা খুঁজে বের করতে পারলেই আটকে রাখা যাবে রাজ্যের হকের বরাদ্দ। কিন্তু প্রতিটি কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির উল্লেখ নেই বলে দাবি করেছেন নবান্নের কর্তারা।

তাহলে রিপোর্টে কী আছে?‌ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল একাধিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। সেখানে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি, দুর্বল অভিযোগ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কিছুই চিহ্নিত করতে পারেননি তাঁরা। কিন্তু তারপরেও আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজ—এই দুই প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য ১৫ হাজার কোটি টাকার কানাকড়িও পায়নি রাজ্য। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি সরকারের কর্তারা মনে করছেন, স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই আটকে রাখা হয়েছে রাজ্যের বরাদ্দ।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেওয়ায় গ্রামে গ্রামে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে উন্নয়ন স্তব্ধ। ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। আর সেটাকেই নির্বাচনে কাজে লাগাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। তাই বাংলাকে এই ধারাবাহিক বঞ্চনা বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার সরব হয়েছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্পে আর কোনও টাকা আসেনি বাংলায়। এই খাতে বকেয়া প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। আবাস যোজনার ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ির জন্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট প্রাপ্য ৮ হাজার ১৮২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা।

ঠিক কী বলছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী?‌ গত একবছরে বাংলায় এসেছে জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের (এনএলএম) ৫১টি দল। এখন মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর এবং কোচবিহারে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে আরও তিনটি দল। এছাড়া গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত ১৭টি প্রতিনিধি দল রাজ্যে এসেছে। সব মিলিয়ে এক বছরে এসেছে ৭১টি পর্যবেক্ষণ দল। স্বচ্ছ ভারত মিশন বা নির্মল বাংলা প্রকল্পে রাজ্যকে ক্লিনচিট দিয়েছে নয়াদিল্লি। ২০২০–২১ অর্থবর্ষে এই খাতে পাওয়া টাকার ইউসি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) তাদের কাছে জমা পড়েছে বলে শুক্রবার রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এই খাতের প্রাপ্য ১২৭.৩০ কোটি টাকাও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। গোটা বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘কেন্দ্রের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠিয়েছি। তার পরেও নানা অজুহাতে দল পাঠানো চলছে। কিন্তু টাকা পাঠানোর নামগন্ধ নেই। সব কিছুর একটা সীমা আছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করার কোনও মানে হয় না। অবিলম্বে আমাদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া উচিত কেন্দ্রের।’