Matua Mela: ঠাকুরনগরে শুরু হচ্ছে মতুয়া ধর্ম মেলা, মতুয়াদের নাগরিকত্ব টোপ জাহাজমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে শুরু হচ্ছে মতুয়া ধর্ম মেলা। এই উৎসবকে ‘‌বারুণী মেলা’‌ বলা হয়। শনিবার এই মেলায় যোগ দিতে মতুয়া ধামে আসেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল। আর মেলার আয়োজন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে একদিকে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। অন্যদিকে মতুয়াদের টোপ দিয়েছেন জাহাজমন্ত্রী। তাই কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। মতুয়া ভোট পেতে গত চার বছর ধরে ‘নাগরিকত্বের’ টোপ ঝুলিয়ে রেখেছে বিজেপি। শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নন, বিজেপির মাঝারি নেতারাও যখনই ঠাকুরনগরে এসেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) মাধ্যমে মতুয়াদের ভারতের নাগরিক করার প্রতিশ্রুতি বিলি করেছেন। সেই ধারা অব্যাহত রাখলেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল।

এদিকে ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অসমের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সর্বানন্দ সোনওয়াল। তখন তিনি নাগরিকত্বের দাবিতে আন্দোলনরত অসংখ্য মতুয়াকে গ্রেফতার করে ‘কনসেনট্রশন ক্যাম্পে’ পাঠিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকী তাঁর শাসনকালেই বঙ্গভাষী মতুয়াদের গায়ে ‘ডি’ (ডাউটফুল) ভোটারের তকমা সাঁটার ঘটনা ঘটেছিল সবচেয়ে বেশি। তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, এই বিষয়টা দ্বিচারিতা! যে ব্যক্তি নিজের রাজ্যে মতুয়াদের ‘বিদেশি’ সাজাতে ব্যস্ত ছিলেন, তিনি যে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ঠাকুরনগরে অন্য কথা বলছেন সেটা স্পষ্ট। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে বলেই আবার সিএএ’র ললিপপ দেখানো শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে বারুণী মেলা উদ্বোধনের পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঠাকুরনগর। মেলার সাফল্য এবং পুণ্যার্থীদের স্বাগত জানিয়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীরা পোস্টার টাঙিয়েছিলেন। মমতাবালার নামাঙ্কিত বেশ কয়েকটি পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁর অনুগামী মতুয়া ভক্তদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনাকে ঘিরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। এই বিষয়ে মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‌এই বিষয়ে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না।’‌

ঠিক কে, কি বললেন?‌ এখানে এসে টোপ দেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী। ঠাকুরনগরে এসে সর্বানন্দ সোনওয়ালের নবতম সংযোজন—‘সরকার যো ওয়াদা কিয়া, ও ওয়াদা নিশ্চিত রূপসে নিভায়া জায়েগা’। অর্থাৎ সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা অবশ্যই পালন করবে। হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১২ তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বারুণী মেলার উদ্বোধনে ঠাকুরনগরে এসেছিলেন জাহাজমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো প্রতিনিধির এমন মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। পাল্টা মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘‌বারুণী মেলায় কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী অবশ্যই স্বাগত। কিন্তু উনি রাজনীতি করতে এসেছিলেন। নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি আবার বিলি করলেন। কিন্তু মানুষ সেটা বুঝেছে, প্রতিবাদ করেছে, তাই মারধর। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।’‌