সিবিআই-এর তলব সত্ত্বেও সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিলেন না কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। আজ তিনি নিজে সিবিআই দফতরে না গিয়ে নিজের আইনজীবীকে পাঠান। উল্লেখ্য, গতকালই তলব করা হয়েছিল ‘কালীঘাটের কাকু’কে। তবে সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেছিলেন, তাঁকে তলব করা হয়নি। তাঁর থেকে নথি চাওয়া হয়েছে কেবল। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকে বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন নিজাম প্যালেসের সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। সেই সময়ও সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেছিলেন, তাঁকে ‘তলব’ করা হয়নি। তিনি বলেছিলেন, ‘বাড়িতে গিয়ে শুধু একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে এসেছিল। স্ত্রী অসুস্থ। তাও এসেছি। তারপরও এরা বলবে যে তদন্তে সহযোগিতা করিনি।’ (আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে চালু হবে আরও এক বন্দে ভারত, ৭৫০ কিমি দূরত্ব পার হবে মাত্র ৬ ঘণ্টায়)
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বেশ কয়েকটি চরিত্রর মুখেই শোনা গিয়েছে এই ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম। এই আবহে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতির টাকার একটা অংশ গিয়েছে বেহালার বাসিব্দা ’কালীঘাটের কাকু’র কাছে। এই টাকার উৎস এবং আদান-প্রদান সংক্রান্ত কোনও তথ্য এখনও তদন্তকারীকে জানাননি সুজয়কৃষ্ণ। এই আবহে সোমবার তাঁর ব্যাঙ্কের যাবতীয় কাগজপত্র ও আয় ব্যয়ের হিসেব জানতে চেয়ে তলব করা হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণকে। তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্যও নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল সিবিআই-এর তরফে। এর আগে কয়লা দুর্নীতি মামলাতেও ডাকা হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণকে। উল্লেখ্য, সুজয়বাবু জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে চাকরি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনের মাঝে কড়া নির্দেশিকা জারি নবান্নর, এবার কোপ পড়বে বেতনে?
প্রসঙ্গত, ‘কালীঘাটের কাকু’ নামটা প্রথম সোনা গিয়েছিল গোপাল দলপতির মুখে। এরপর কুন্তল ঘোষের মুখেও এই নামটা শোনা যায়। এরপরই জেরায় উঠে আসা তথ্য থেকে সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের অনুমান করেন, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় যে কোটি কোটি কালো টাকা আসত, তার একটা বড় অংশ ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত। সিবিআই মনে করছে, এই টাকা সাদা করার জন্য নিজের স্ত্রী এবং মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কাজে লাগাতেন সুজয়। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার টাকা গোপাল দলপতি মারফত কুন্তল ঘোষ এবং কুন্তল ঘোষের থেকে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছে পৌঁছনোর পর সেই টাকা কোনও প্রভাবশালীদের ব্যাঙ্কে ঢুকেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সিবিআইয়ের অভিযোগ, শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর মত প্রভাবশালীরাই যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত, এমনটা নয়। জেলা এবং ব্লকস্তরেও একাধিক ছোটখাটো মিডিলম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যক্তি সরাসরিভাবে যুক্ত রয়েছেন এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে।