Marital Rape Case in Supreme Court: বৈবাহিক ধর্ষণ কি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে? মামলার শুনানির দিন জানাল সুপ্রিম কোর্ট

বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার দাবি জানিয়ে দেশে যত মামলা দায়ের হয়েছে, তার সম্মিলিত শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে। সেই শুনানির দিনক্ষণ জানাল সর্বোচ্চ আদালত। আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আজ জানান, এই মামলার শুনানি হতে চলেছে ৯ মে। আজ সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইন্দিরা জয়সিং বিষয়টি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সামনে উত্থাপিত করেছিলেন। তিনি জানান, এই মামলার সওয়াল জবাব করতে তারা প্রস্তুত এবং যাবতী তথ্য সাজানো হয়ে গিয়েছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও জানান, কেন্দ্রের জবাব তৈরি রয়েছে। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলাটিকে ৯ মে লিস্ট করা হোক।’ (আরও পড়ুন: অধিকার আদায় করতে বড় পদক্ষেপ, ডিএ আন্দোলকারীদের গলায় উঠল ‘দিল্লি চলো’ রব)

উল্লেখ্য, এর আগে বৈবাহিক ধর্ষণ ইস্যুতে ‘ব্যতিক্রমে’র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে দাখিল করা পিটিশনের জবাব দিতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রকে। তাতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছিলেন, এই ইস্যুটির প্রভাব পড়বে সমাজে। তিনি আরও জানান, কয়েক মাস আগে রাজ্যগুলিকে এই বিষয়ে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলেছিল কেন্দ্র। এর আগে ২০১৭ সালে আদালতে হলফনামা দিয়ে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার বিরোধিতা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পরে আবার কেন্দ্র জানায়, বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে মত পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এবার কলকাতাতে, স্বাক্ষরিত মউ, কাজ পাবেন ৩০,০০০

প্রসঙ্গত, শীতকালীন ছুটির আগেই শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৫ ধারায় থাকা বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত ‘ব্যতিক্রমে’র আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যে পিটিশন দাখিল হয়েছে, তার শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে। সেই মতো মামলাটি ওঠে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। তখন কেন্দ্রের থেকে এই মামলার প্রেক্ষিতে মতামত জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে কর্ণাটক হাই কোর্ট এবং দিল্লি হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, সেগুলিরও বৈধতা খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই সংক্রান্ত আবেদনের শুনানিও হবে সর্বোচ্চ আদালতে।

এর আগে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভক্ত রায় দিয়েছিল দিল্লি হাই কোর্ট। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে একটি আপিল দায়ের করা হয় এই নিয়ে। এর আগে বহুদিন ধরেই দিল্লি হাই কোর্টে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে মামলা চলেছিল। তবে উচ্চ আদালতের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে কোনও রায় দিতে পারেনি। মামলার রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজীব শকধেরের বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এটি ব্যতিক্রম। স্ত্রীদের অসম্মতিতেও স্বামীরা যে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারেন, এই বিষয়টির নৈতিকভাবে মৌলিক অধিকার বিরোধী।’ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারার ২ নং ব্যতিক্রম তুলে ধরে বিচারপতি শকধের নিজের রায়ে বলেন, ‘যৌনকর্মীরা আইনত না বলতে পারেন, তবে বিবাহিত স্ত্রী তা পারেন না। যদি কোনও মহিলার স্বামী তার স্ত্রীর গণধর্ষণে যুক্ত থাকে, তাহলে সে সম্পর্কের খাতিরে পার পেয়ে যাবে। অন্য অভিযুক্ত ধর্ষণের সাজা ভোগ করলেও ধর্ষণকারী স্বামীর কিছুই হবে না।’ তবে বেঞ্চের অপর বিচারপতি সি হরিশংকর বলেন যে বৈবাহিক সম্পর্কে থাকা কোনও পুরুষ বলপূর্বক স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা কোনও আইন লঙ্ঘন করে না। তিনি সংবিধানের ৩৭৬বি ও ১৯৮বি-র কথা তুলে ধরেন। এবং তিনি বলেন, বৈবাহিক ধর্ষণ অসাংবিধানিক নয়।

এদিকে এই সংক্রান্ত মামলার প্রেক্ষিতে কর্ণাটক হাই কোর্টের তরফে বলা হয়েছিল, ‘এই ধরনের অসাম্যের অস্তিত্ব নিয়ে চিন্তা করার দায়িত্ব আইন প্রণেতাদের। যুগে যুগে স্বামীর পোশাক পরিধানকারী পুরুষ নিজেদের স্ত্রীর দেহ, মন ও আত্মার শাসক হিসেবে দেখে আসছে। প্রচলিত এই চিন্তাধারা ও প্রথা মুছে ফেলা উচিত। এই পুরনো, পশ্চাদপসরণমূলক এবং পূর্বকল্পিত ধারণার উপর ভিত্তি করেই এই ধরণের ঘটনাগুলি দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।’