শাড়ি পরে না এলে ক্লাসে যেতে পারবেন না, কলকাতার স্কুলে পোশাক ফতোয়া

সালোয়ার কামিজ পরে ক্লাস করানো যাবে না। ক্লাস করাতে গেলে শাড়ি পরে আসতে হবে। কিন্তু স্কুলের গানের শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষিকার এই ফতোয়া মানতে চাননি। আর তার জেরে গত একমাস ধরে তাঁকে ক্লাস করাতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এদিকে নিউ আলিপুরের ওই স্কুলের শিক্ষিকা এনিয়ে বার বার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন মহলে প্রতিকার চেয়ে দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছু হয়নি। কোথায় কোথায় অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি?

সূত্রের খবর, স্কুলের গানের শিক্ষিকা ইতিমধ্য়েই রাজ্যের মহিলা কমিশন, মানবাধিকার সংগঠন, পুলিশ, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছেন। শিক্ষিকার দাবি, তারপরেও অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন তাঁকে এভাবে শাড়ি পরতে বাধ্য করা হচছে? ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটি?

সূত্রের খবর, সোমা ভাদুড়ি নামে ওই শিক্ষিকা গত ১৮ বছর ধরে রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের আওতায় থাকা আলিপুরের ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম গার্লস স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। বিগতদিনে তিনি শাড়ি পরেই স্কুলে আসতেন। কিন্তু গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভিড় বাসে পায়ে শাড়ি জড়িয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। এরপরই তিনি স্কুলে এসে শাড়ির বিকল্প পোশাক পরে আসার ব্যাপারে আবেদন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন পরের দিন থেকে তিনি সালোয়ার কামিজ পরেই স্কুলে আসবেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁর সেই আবেদন মেনে নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তরফে জানানো হয়েছিল, সালোয়ার কামিজ পরে এলেও স্কুলে এলেও ক্লাসে যাওয়ার আগে পোশাক পরিবর্তন করতে হবে। এনিয়ে প্রধান শিক্ষিকা কার্যত তাঁর অবস্থানে অনড়।

এদিকে ইতিমধ্যেই একটি মানবাধিক সংগঠন স্কুলে গিয়ে প্রধানশিক্ষিকাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফেও চিঠি দিয়ে ওই স্কুলের কাছে গোটা বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, মার্জিত, রুচিসম্মত পোশাক পরা যেতেই পারে।

তবে শিক্ষিকার দাবি, শাড়ি পরতে তিনিও ব্যক্তিগতভাবে ভালোবাসেন। কিন্তু দৈনন্দিন কাজে ছুটতে হচ্ছে। তখন শাড়ি পরতে বাধ্য নই।

এদিকে সকালের বিভাগে তিনি একমাত্র গানের শিক্ষিকা। কিন্তু স্কুলে এলেও তাঁকে ক্লাস করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি স্টাফরুমেই বসে থাকেন। গানের ক্লাসের জন্য বরাদ্দ সময়ে অন্য বিষয়ের ক্লাস দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষিকার দাবি, এর জেরে সাধারণ ছাত্রীরাই তো সমস্যায় পড়ছেন।