আপত্তি সত্ত্বেও নীল সাদা পোশাকে জোর, প্রস্তুতি চরমে, কী করবে স্কুল পড়ুয়ারা?

নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হচ্ছে। আবার স্কুলে স্কুলে সেই নীল সাদা পোশাক দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে রাজ্যের একাধিক স্কুলে এই সরকারি নীল সাদা পোশাক নেওয়ার ক্ষেত্রে গতবারেই নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছিল যে সরকারি নীল সাদা পোশাক ফেলে দিয়েছিল পড়ুয়ারা এমন নজিরও রয়েছে। এমনকী সরকারি সেই পোশাকের মান নিয়েও নানা সময় অভিযোগ উঠছে। তারপরেও কেন নীল সাদা নিয়ে এত জোরাজুরি?

কিন্তু তারপরেও নীল সাদা পোশাক বন্টন থেকে সরে আসছে না সরকার। কিন্তু অনীহাটা ঠিক কোনখানে?

আসলে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাক রয়েছে। এমনকী সেই পোশাকের সঙ্গে বিশেষ আবেগও জড়িয়ে থাকে। বছরের পর বছর সেই পোশাকটিকেই আপন করে নিয়েছে পড়ুয়ারা। তাছাড়া স্কুলের পোশাক দেখেই বোঝা যেত এতদিন, যে কারা কোন স্কুলের পড়ুয়া।

এদিকে সরকারি সাদা নীলের দাপটে সেই পোশাক বৈচিত্রটা সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যায়। তবে গত বছরেও একাধিক স্কুল পড়ুয়া সেই সাদা নীল পোশাক বয়কট করেছিল। তারা স্কুলের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরেই আসা শুরু করে। কিন্তু ফের সেই সাদা নীল পোশাক দেওয়ার উদ্যোগ। একাধিক স্কুলে এনিয়ে মাপ নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। তাতে বেজায় আপত্তি তুলেছে পড়ুয়াদের একাংশ।

এদিকে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নীল সাদা পোশাক দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই মতো গতবারেও সেই ধরনের পোশাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ এনিয়ে আপত্তি তুলেছিল। এমনকী কোচবিহারের রাজ আমলের একাধিক স্কুলের বাইরে প্রতিবাদ মিছিলও বের করেছিলেন প্রাক্তনীরা। তাঁদের দাবি ছিল স্কুলের ইউনিফর্মের সঙ্গে পড়ুয়া, প্রাক্তনীদের আবেগ জড়িয়ে থাকে। এই নীল সাদা সরকারি পোশাক সেই আবেগে আঘাত দিচ্ছে।

তবে শুধু কোচবিহার নয়, কলকাতার একাধিক ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল তারা পড়ুয়াদের জন্য নীল সাদা পোশাক নিতে চায় না। এদিকে গতবারেই বহু পড়ুয়া নীল সাদা পোশাক নিতে চায়নি। তার জেরে সেই পোশাক পড়ে থাকে স্কুলেই। কার্যত বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে সেই নীল সাদা পোশাক। আবার নতুন করে পোশাকের মাপ নেওয়া হচ্ছে। এখানেই প্রশ্ন যে পোশাক নিতে এত অনীহা পড়ুয়াদের সেই পোশাক কেন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে?