ভোর থেকেই পদ্মা সেতু প্রাঙ্গণে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল

এবার ঈদ সামনে রেখে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ছয়টি শর্তে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চালকরা পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় অপেক্ষা শুরু করেন। তাদের অনেকেই ঢাকা থেকে রাতে এবং অনেকেই সেহেরি করেই রওনা দিয়েছেন।

তবে সময় হওয়ার আগে কাউকে সেতুতে উঠতে দেওয়া হয়নি। মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে এনে পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে দিয়ে আলাদা লেনে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার আগে আটকে রাখে পুলিশ।

এ সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সরকার ঘোষিত সকাল ৬টার আগে কোনও মোটরসাইকেল পদ্মা সেতুতে উঠতে দেওয়া হবে না। এ জন্য যেসব মোটরসাইকেল ৬টা বাজার আগেই পদ্মা সেতু প্লাজার কাছে চলে আসছে তাদের আমরা পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে থেকে রোড ডাইভারশন দিয়ে ঘুরিয়ে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।

পদ্মার সেতুতে চলতে মোটরসাইকেলের জন্য রয়েছে নির্ধারিত একটি টোল। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর পরেও মোটরসাইকেলের জন্য রোড ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে।

পদ্মা উত্তর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মোটরসাইকেলগুলোকে শৃৃঙ্খলিতভাবে পদ্মা সেতুতে ওঠানোর জন্য থানার একটি টিম কাজ করছে। সকাল ৬টার আগে কোনও মোটরসাইকেলকে পদ্মা সেতুতে উঠতে দেওয়া হয়নি।

আনিসুর রহমান বলেন, ৬টার আগে আসা সব মোটরসাইকেল চালককে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার আগেই লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে।

২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করার পর দিন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। প্রথম দিন বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল সেতু দিয়ে পার হয়। টাকার বিনিময়ে বাইকে করে সেতু পার করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এরমধ্যেই ওই দিন রাতে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই জন মারাত্মক আহত হন। ওই দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

পরদিন সেতুটি দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার। অবশেষে গত মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাইক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে মোটরসাইকেল। ২০ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। সেতুর বাম পাশে সার্ভিস লেন দিয়ে চলবে। স্পিড লিমিট ঘণ্টায় থাকবে ৬০ কিলোমিটার। গতি এর বেশি তোলা যাবে না।

তিনি জানান, কোনোভাবেই সার্ভিস লেনের বাইরে মূল সেতুতে মোটরসাইকেল আসতে পারবে না। নির্ধারিত হারে টোল প্রদান করতে হবে। যদি নিয়ম না মানে তাহলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে।

এবার ঈদ উপলক্ষে শর্ত সাপেক্ষে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য কর্তৃপক্ষ যে ছয়টি শর্ত দিয়েছে, তা যদি চালকরা যথাযথ মানেন, তাহলে ঈদের পরও সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল অব্যাহত থাকবে।