চাঁদ দেখা গেছে, কাল খুশির ঈদ

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল শনিবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ইসলাম ধর্মীয় পরিভাষায় এর অর্থ হলো পুরস্কারের দিবস। দীর্ঘ এক মাস রমজানে সংযমের পর মুসলমানরা এ দিনে আনন্দ করেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী রমজান শেষ হলেই শুরু হয় শাওয়াল। উৎসব হিসেবে ঈদুল ফিতর পালন করা হয় এ মাসের প্রথম দিনে।

মুসলমানদের অনুষ্ঠান নির্ধারণ হয় হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, যা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। শাওয়াল মাস হিজরি বর্ষপঞ্জির দশম মাস। শাওয়ালের প্রথম দিনটি ঈদ-উল-ফিতর হিসেবে উদযাপিত হয়। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, কোনও মাস ২৯ দিন, কোনও মাস ৩০ দিনের হয়, যা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। কোনও মাসের ২৯তম দিনে যদি চাঁদ দেখা যায়, তবে পরের দিন থেকে পরবর্তী মাসের গণনা শুরু হবে। চাঁদ না দেখা গেলে মাসটি ৩০ দিনে পূর্ণ হবে। আজ শুক্রবার রমজান মাসের ২৯তম দিন। বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যাওয়ায় কাল শাওয়াল মাসের শুরু হচ্ছে।

এক মাসের সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন মুসলমানরা। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করায়। এটি কেবল আনন্দের বার্তাই নিয়ে আসে না, বরং এর মধ্য দিয়ে প্রসারিত হয় ইসলামে বর্ণিত সাম্যের জয়গান।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে, সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এছাড়াও ঢাকায় প্রায় ১ হাজার ৪৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঈদগাহ ও মসজিদ মিলিয়ে কোনও কোনও জাগায় একাধিকবার ঈদের নামাজ পড়ানো হবে। 

ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে। হাইকোর্ট সংলগ্ন ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ মাঠে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি (নারী-পুরুষ) ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারবেন। জাতীয় ঈদগাহের জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনৈতিকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং ঢাকাবাসীরা অংশ নেবেন। নারীদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনি বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে ঈদুল ফিতরের দিন সারা দেশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। শুধু তাই নয়, ঈদের পরের তিন দিনও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আর বৃষ্টির কারণে কমে আসবে তাপমাত্রা। ফলে সারা দেশে এখন যে দাবদাহ বইছে, তাও কমে আসতে পারে।

ঝড়-বৃষ্টি হলে ঈদগাহে যেন পানি ঢুকতে না পারে, সে জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহে। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহ থেকে পরিবর্তিত হয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৯টার জামাতের সাথে একীভূত হবে।

আরও পড়ুন:

কমিটি যেভাবে চাঁদ দেখে 

মধ্যপ্রাচ্যে শাওয়ালের চাঁদ দেখা নিয়ে মতভেদ