ক্ষতিপূরণ ও ভবন মালিকসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর উপলক্ষে নিহতদের স্মরণ করেছেন তাদের স্বজনরা, আহত শ্রমিক, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সোমবার সকাল থেকে প্লাজার সামনে অবস্থিত অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আহত-নিহতদের স্বজন ও শ্রমিক নেতারা। এ সময় তারা ক্ষতিপূরণ ও ভবন মালিকসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন।

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- সব দোষীদের পরিচয় জনগণের সামনে এনে ভবন মালিক সোহেল রানাসহ সবার সব্বো‍র্চ্চ শাস্তি, রানা প্লাজার নিহত শ্রমিকের প্রতিনিধি ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিকের জন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড ও ২৫ হাজার টাকা মজুরি, মজুরি বৃদ্ধির আগ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান, ক্ষতিপূরণের আইন বদল করে এক জীবনের ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসাভার ও প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন, রানা প্লাজা এলাকা যথাযথ সংরক্ষণ ও স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি, সব শ্রমিকদের জন্য মালিক-সরকার ও বায়ারের উদ্যোগে জরুরি তহবিল গঠন এবং ২৪ এপ্রিল শোক ও নিরাপত্তা দিবস হিসেবে সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা।

রানা প্লাজায় আহত শ্রমিক বুলবুলি আক্তার বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসে আমি পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। নামমাত্র অনুদান ছাড়া আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। বিচারও পাইনি। আমাদের কোনো দাবিই পূরন হয়নি। আমরা ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।’

গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই আমরা বিভিন্ন দাবি তুলে আসছি। এই ১০ বছরে আমাদের দাবিগুলো পূরন হলো না। ১০ বছর পরে এসেও আমরা একই দাবি জানাচ্ছি।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি ১০ বছর হয়ে গেলেও এখনও নিহত শ্রমিক পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন হয়নি। রানা প্লাজার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারও হয়নি। 

রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের এক জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন ব্যবস্থা করা, রানা প্লাজা ধসের জন্য দায়ী সবার বিচারের ব্যবস্থা, দেশের শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকবান্ধব আইন গড়ে তোলা, দেশের সব শিল্প খাতে আহত শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও সরকারি ভাতার ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।

এর আগে বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় চোখের জলে নিহতদের স্মৃতিচারণ করেন আহত শ্রমিক ও স্বজনরা।

এছাড়া গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট, গার্মেন্টস শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন একে একে ফুল দিয়ে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।