বাজ পড়ে মৃত্যু সারা বিশ্বেই হয়। ভারতেও তেমনই সাধারণ ঘটনা এটি। তবে বাংলায় বাজ পড়ে মৃত্যু্র ঘটনা অনেকটাই বেশি। পর পর শেষ কয়েক বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে সারা দেশের তুলনায় বাংলায় মৃত্যুর হার বেশি। কিন্তু কেন? বিজ্ঞানীদের কথায় এর পিছনে রয়েছে একটি বিশেষ কারণ। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরিওলজির বিজ্ঞানী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে সে কথাই জানালেন।
আরও পড়ুন: চরম ক্ষতি হচ্ছে শরীরের, ফল খাওয়ার সময় ৫ ভুল করেন বলেই, জানলে আজ থেকেই এড়াবেন
আরও পড়ুন: খিদে পায়নি, অথচ মুখরোচক খাবার খাওয়া যেন নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কেন এমন হয় জানেন
বৃহস্পতিবার বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। পরদিন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে পাঁচ শিশু বাজ পড়ায় আহত হয়। মনসুন মিশনের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ও বিজ্ঞানী পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা ও বাংলা এই তিন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকটাই বেড়েছে বাজ পড়ার হার। আর তা থেকেই বাড়ছে মৃত্যু। তবে বাজ পড়ার হার বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে দায়ী মানুষেরাই। এমনটাই জানাচ্ছেন পার্থবাবুর কথায়, বাংলা একটি বড় বজ্রাপাতের হটস্পট। গত কয়েক বছরে দ্রুত হারে কমছে বনাঞ্চলের ঘনত্ব। একইসঙ্গে বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা, জলাভূমির সংখ্যা কমছে, তৈরি হচ্ছে বড় বড় ইমারত। এই সবের কারণে একদিকে যেমন বাড়ছে দূষণের পরিমাণ, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে বাতাসে দূষিত অ্যারোসলের পরিমাণও। আর এতেই বাড়ছে বজ্রপাতের হার।
অন্যদিকে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বজ্রপাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অনির্বাণ গুহ সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, প্রতি বজ্রপাতে গড়ে ৩০০ মিলিয়ন ভোল্ট বিদ্যুৎ ও ৩০০০ অ্যাম্পিয়ার প্রবাহ থাকে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে একটা ১০০ ওয়াটের বাল্ব তিন মাস জ্বালিয়ে রাখা যায়! এভাবে ঘন ঘন বাজ পড়ায় মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুরও মৃত্যু হয়। জোর ধাক্কা খায় অর্থনীতি। পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯-২০ সালে ৫২৯ জনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বাজ পড়ার ফলে ২৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২০-২১ সালে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৯। অর্থাৎ যতদিন পরিবেশের দিকে নজর না দেওয়া হচ্ছে, ততদিনই বাড়তে থাকবে এই বিপদ। বিজ্ঞানীদের কথাতেও এখন তেমন ইঙ্গিত।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup