প্রাথমিকে নতুন নিয়োগের খরচ প্রয়োজনে মানিকের কাছ থেকে, বিচারপতির নির্দেশ, কী বলছে পর্ষদ?

কথায় আছে লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন! তবে এবার প্রাথমিকে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি জেলবন্দি তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত। সূত্রের খবর, ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগের নির্দেশ।

 সেই সঙ্গেই আদালত জানিয়েছে, ওই শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। তাই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার খরচ রাজ্য সরকার চাইলে মানিকের কাছ থেকে নিতে পারবে। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়।

তবে বিচারপতির এই নির্দেশকে ঘিরে একেবারে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা বাংলাজুড়ে। পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। গত বছরের ১১ অক্টোবর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার করেছিল ইডি। মানিকের গ্রেফতারির পরেই নানা তথ্য সামনে আসতে থাকে। এমনকী গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুর্নীতির বৃত্তে একেবারে কেন্দ্রে ছিলেন মানিক। একথা বার বারই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছে। মানিকের স্ত্রী পুত্রকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার সেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও বিপাকে পড়লেন মানিক ভট্টাচার্য।

মামলাকারী আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আদালত জানিয়েছে প্রয়োজনে মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে নতুন নিয়োগের জন্য খরচের টাকা নেওয়া যাবে।

এদিকে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে খরচ নেওয়া প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, আমি অর্ডারটা দেখে তারপর বলব। তবে আমি পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলব। তারপরই এনিয়ে কথা বলতে পারব। যারা নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তারা তাঁদের যোগ্যতামান প্রমাণ করেছিলেন।

এদিকে এর আগেও নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতি। বিদেশের সম্পত্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল আদালতে। তবে তার উত্তরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে একেবারে অস্বীকার করেছিলেন মানিক। তবে এবার আদালতের নির্দেশে আরও অস্বস্তি বাড়ল জেলবন্দি মানিকের।

তবে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই মতো দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়ে গিয়েছে। কোনওভাবেই যাতে ওই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল না হয় সেটা নিশ্চিত করার জন্য় কার্যত উঠেপড়ে লেগেছে পর্ষদ। আর সেই নিরিখে মানিকের প্রসঙ্গ নিয়ে আর নতুন করে মন্তব্য করতে চাইছে না পর্ষদ।