এবার অমিত শাহের মন্ত্রক চিঠি দিল নবান্নকে, নয়া সিদ্ধান্তে সংঘাতের আবহের সম্ভাবনা

কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকার আধার–প্যান সংযোগ করার ফরমান জারি করেছিল। এখন এই ফরমান মেনে সারা দেশে কাজ চলছে। যার বিরোধিতা করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি ছিল, একহাজার টাকা গরিব মানুষের কাছ থেকে নিয়ে এই কাজ করা যাবে না। যদি করতেই হয় তাহলে বিনামূল্যে সেই সংযোগ করতে হবে। এই নিয়ে যখন বিতর্ক অব্যাহত তখন বাংলাকে জন্ম–মৃত্যু নথিবদ্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দিল অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এতদিন রাজ্য নিজস্বভাবে এই তথ্য সংরক্ষণ করত। এই নিয়ে এখন সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী এনআরসি’‌র ছায়া পর্যন্ত দেখছে রাজ্য।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে জন্ম–মৃত্যু নথিভুক্ত করার জন্য অনলাইন পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যুক্ত রয়েছে। আর বাংলা নিজেদের সেখানে যুক্ত করেনি। তাই সেই তালিকাতেও পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই। এবার এই পদ্ধতির ব্যবহার করতেই অমিত শাহের মন্ত্রক নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেখানে এই অনলাইন পোর্টালে জন্ম–মৃত্যু নথিভুক্ত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি কৌশলে এনআরসি করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার?‌ এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নবান্নের অলিন্দে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি।

কেন এমন করা হচ্ছে?‌ সূত্রের খবর, এখন সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমের সরাসরি মানুষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সুবিধা পান। ইতিমধ্যেই আধার–প্যান সংযোগের ফরমান জারি হয়েছে। ভবিষ্যতে এই অনলাইন পোর্টালে জন্ম–মৃত্যু নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হতে পারে। আর এইভাবে ভুয়ো উপভোক্তা ধরতে চেষ্টা করা হতে পারে। সুতরাং এই কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টালে রাজ্য সাড়া না দিলে পরবর্তীকালে প্রকল্পের সুবিধা নাও মিলতে পারে। অর্থাৎ জটিলতা তৈরি হতে পারে। আবার রাজ্য এই চিঠির পিছনে এনআরসি করার ছক দেখতে পাচ্ছে। ফলে কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টালে রাজ্য সাড়া দেবে কিনা বা সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হবে কিনা সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ কয়েকদিন আগে মালদা–মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‌এনআরসি নিয়ে আবার চিঠি পাঠিয়েছে। নির্বাচন এলেই মনে পড়ে। আমি কথা দিচ্ছি, করব না এবং করতেও দেব না। ওই চিঠিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, যাদের সব কিছু পাওয়া যাবে না তাদের বিদেশি হিসাবে ঘোষণা করবে। যাতে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া যায়। তাই ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন। আধার কার্ডগুলি আবার করতে বলছে ১০ বছর পরে। সেটা শুরু হলে করে নেবেন।’‌ এই মন্তব্যের একমাস কাটেনি, তার মধ্যেই আবার এল চিঠি। তাই এই চিঠির পরামর্শের পিছনে এনআরসি লুকিয়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে।