‘‌এনআইএ তদন্তে আপত্তি নেই প্রকৃত অপরাধী যেন ধরা পড়ে’‌, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মমতার

বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটলে একের পর এক মৃত্যুর খবর সামনে আসে। এগরার খাদিকুল গ্রামে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আজ, মঙ্গলবার বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। পরে আরও দু’‌জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন। পাল্টা এই এনআইএ তদন্তে কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই ঘটনার তদন্ত মুখ্যমন্ত্রী সিআইডি’‌র হাতে তুলে দিয়েছেন।

আজ নবান্নে এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং গুরুতর আহতদের পরিবারপিছু ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। এলাকাবাসীর দাবি, এই এলাকায় একাধিক অবৈধ বাজি কারখানা রয়েছে। দুপুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা–১ নম্বর ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রাম। অবৈধ বাজি কারখানার জেরেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে।

এদিকে এগরার বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী–সহ অন্যান্যরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনাটি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন বিজেপি নেতারা বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ নবান্নে বলেন, ‘ওরা এনআইএ চাক না, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে প্রকৃত অপরাধী যেন ধরা পড়ে।’ তবে তারপরই তিনি ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন। এই বিস্ফোরণের জেরে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে একাধিক মৃতদেহ। দেহগুলি আগুনে সম্পূর্ণ ঝলসে গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এটি বেআইনি বাজি কারখানা। যার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ। তাকে ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে আদালত থেকে জামিন পায় সে। এই বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই পলাতক কৃষ্ণপদ। পাল্টা বিজেপি দাবি করেছে, কৃষ্ণপদ বাগ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। এই শুনে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, তৃণমূলের লোক হলে গতবার কালীপুজোর সময় রাজ্য পুলিশ কেন গ্রেফতার করল?‌ যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ওড়িশা সীমানা থেকে কিছুটা দূরে একটা বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল। বিস্ফোরণের জেরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে।’ সিআইএফ–এর এডিজি জ্ঞানবন্ত সিংকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বুধবার মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অকুস্থলে যাবে। ঘটনাটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌ওটা ওড়িশার বর্ডার। ওই পঞ্চায়েত বিজেপির। ওদের দেখা উচিত ছিল। দু’মাস আগে নির্দলকে সভাপতি রেখে বিজেপি পঞ্চায়েত করেছে। মালিক পালিয়েছে ওড়িশায়। আমরা টেনে আনব।’‌