‘‌ভরসার জায়গাকে সার্কাস বানিয়ে ফেলেছেন স্যার’‌, বিচারপতিকে খোঁচা দেবাংশুর

আজ, মঙ্গলবার ববিতা সরকারের স্কুলের চাকরি বাতিল করে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই চাকরি তাঁর নির্দেশেই হয়েছিল। তখন অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছিল পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে। এমনকী অঙ্কিতা অধিকারীর বেতনের পুরো টাকা দিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা চলে গিয়েছিল ববিতার হাতে। এবার ববিতার চাকরি চলে গেল। টাকাও চলে যাবে। এই গোটা প্রক্রিয়াটি ঘটেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে। এবার এই ভুলকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরে কড়া ভাষায় বিঁধলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য।

তিনি অবশ্য গোটা পোস্টটিতে কোথাও বিচারপতির নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু তিনি পুরো ঘটনাটি তুলে ধরেছেন। যার ছত্রে ছত্রে আছে সমালোচনার ধারালো তির। তাঁর ফেসবুক পোস্টটি পড়লে বুঝতে অসুবিধা হবে না—কার উদ্দেশে, কোন ঘটনার জন্য এই ফেসবুক পোস্ট। আজ, ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার চাকরিটি পাবেন অনামিকা রায়। এই বিষয়টি আজ প্রকাশ্যে আসতেই কড়া ভাষায় টুইট করেছেন দেবাংশু। কারণ এটা একটা মারাত্মক ভুল। তাই দেবাংশু লিখেছেন, ‘‌হিরো সাজতে গিয়ে, রাজনৈতিক ফায়দা নিতে গিয়ে একজনের চাকরি খেয়ে আরেকজনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। হিরো সাজার এত তাড়াহুড়ো ছিল, যাকে চাকরি দিচ্ছেন সে যোগ্য কিনা সেটুকু খুঁটিয়ে দেখার ইচ্ছে বা সময় কোনোটাই হয়নি! সময় কম, সন্ধ্যায় প্যানেল ডিসকাশনের বিষয়বস্তু হতে হবে যে! তাই বাঁশি বেজে গেছে.. দ্রুত ভগবান সাজতে হবে!’‌


কেন ববিতার চাকরি বাতিল হল?‌ ববিতা সরকারের চাকরি বাতিলের দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায়। তাঁর অভিযোগ, এসএসসি’‌র কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। তাই তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। এটাই তুলে ধরেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে অনামিকা রায়। তারপরই বাতিল হয়ে গেল ববিতা সরকারের চাকরি। তাই দেবাংশু লিখেছেন, ‘‌আর সেই ভগবান সাজতে গিয়ে একজন অযোগ্যের হাত থেকে আরেকজন অযোগ্য মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। তাহলে আপনার সাথে পর্ষদের ফারাক কোথায় রইল? তারা যে ভুল করেছিল, আপনিও তো একই ভুল করলেন.. আপনারাই বলেন, ‘‌তারা হয়ত এসব করেছিল পার্থ চ্যাটার্জির মত লোকেদের চাপে…’‌, ঠিক কিনা সে তো ফাইনাল রায় বলবে। কিন্তু একই কাজ আপনি কেন করলেন? আপনি করলেন হিরো সাজার তাড়নায়.. তফাৎ কি রইল?’‌ তবে নাম নেননি বিচারপতির।

আর কী খোঁচা দিলেন দেবাংশু?‌ বড় কাজ করতে গেল ভুল হয়। সেটা শুধরে নিতে হবে। সময় দিতে হবে। এই কথা বারবার বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্য সরকারের সমালোচনাই বেশিরভাগ সময় করা হয়েছে। ঢাকি সমেত বিসর্জন দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল বিচারপতির মুখে। এসব মনে রেখেই দেবাংশুর খোঁচা, ‘‌আজ নিজেই আবার দ্বিতীয় অযোগ্য মহিলার চাকরি খেলেন.. হয়ত তৃতীয় আরেকজনের হাতে তুলে দেবেন! মানুষের আশা, ভরসার একটা জায়গাকে রীতিমত সার্কাস বানিয়ে ফেলেছেন স্যার!’‌