মির্জা আব্বাস বললেন ‘আমরা নির্বাচনে যাবো, তবে…’

আওয়ামী লীগের এক নেতাকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এক এগারোর সময় জেলে তাদের এক নেতা আমার সামনে কান ধরে ওঠবস করেছিল। বলেছিল, আর রাজনীতি করবো না ভাই। আজ সেই নেতা বড় বড় কথা বলেন। তিনি বলেন খেলা হবে। আমরা আপনাদের এসব খেলায় অংশগ্রহণ করবো না। খেলা তো শুরু হয়ে গেছে। আমরা আপনাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে কোনও ঝামেলায় যেতে চাই না।’

বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই খেলা শেষ করে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। খেলা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে ওবায়দুল কাদের সাহেব। আমরা শুধু নির্বাচনে যাবো। তবে আমরা ফ্রেশ ফেয়ার নির্বাচন চাই।’

শুক্রবার (১৯ মে) বিকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জেলা ও মহানগর বিএনপির এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশকে রক্ষা করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাদের বিদায় না করলে উন্নয়ন হবে না। মানুষের পেটে ক্ষুধা রেখে দুটো ব্রিজ করলে উন্নয়ন হয় না। আগে পেটের ভাত তারপর উন্নয়ন। যে উন্নয়নের চেয়ে বেশি নিজের পকেটের উন্নয়ন হয় সেই উন্নয়ন আমাদের প্রয়োজন নেই।’

তিনি বলেন, ‘তারা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। দেশের জনগণ এই লুটপাটের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আমরা বারবার প্রতিবাদ করেছি। সরকারের বোধ হয়নি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ব্রিজ করতে বাইরে লাগে ছয় সাত হাজার ডলার। আমার দেশে লাগে ত্রিশ হাজার ডলার। এটা কী মগের মুল্লুক নাকি? সরকারি কর্মকর্তারা একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে আছে। এ বলে তুই বেশি খেয়েছিস ও বলে তুই বেশি খেয়েছিস। পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। ওরা বলে তেলের দাম বাড়াবো না আন্তর্জাতিক বাজারের দামে ছেড়ে দেবো। এতদিনে কেন? আমার নেত্রী কী দেশ চালাননি ভর্তুকি দেননি? তখন কি দাম বেড়েছিল? বাড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আপনাদের আন্দোলনের সম্মান জানিয়ে সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল। এই সরকারের দাবি সবার আগে ছিল জামায়াতের। আজ তাদের নাকি আবার আপস করা হচ্ছে শুনলাম। খালেদা জিয়া চাইলে আজ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। আর আপনারা কী করলেন? শত শত মানুষকে গুম করলেন হত্যা করলেন। এভাবে একটা দেশ কখনও চলতে
পারে না।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘এখনও সময় আছে, মানুষের মুখের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। নয়তো পরে পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবেন না। আপনারা কীভাবে পালাবেন চিন্তা ভাবনা করেছেন। আপসে গেলে যান জোর করে পালাতে পারবেন না। জনগণ আপনাদের বিচারের পাল্লায় তুলবে। জনগণ আপনাদের ছাড়বে না। যারা গুম হয়েছে তাদের বাবা মা আপনাদের ছেড়ে কথা বলবে না।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিসহ আরও অনেকে।