Sugar in Cold Drinks: ঠান্ডা পানীয়তে কতটা চিনি থাকে জানেন? শুনলে চমকে উঠবেন

কোল্ড ড্রিঙ্কস এখন আধুনিক জীবনযাত্রার একটা অংশ বলা যেতে পারে। কোকা-কোলা, পেপসি, থামস আপ এবং স্প্রাইটের মতো ব্র্যান্ড ভারতের বাজারে কোটি-কোটি টাকার ব্যবসা করছে। বিরিয়ানি, পিজ্জার সঙ্গে গলা ভেজানোর জন্যই হোক, বা গরমের দুপুরে ক্ষণিকের ব্রেক, কোল্ড ড্রিঙ্কস যেন আমাদের অজান্তেই জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই ঠান্ডা, ঝাঁঝালো পানীয়ের স্বস্তির পিছনেই এক অস্বস্তিকর বাস্তব লুকিয়ে- চিনি। এই জাতীয় পানীয়ের অত্যাধিক চিনি যে জনস্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ বিপদজনক, তা বলাই বাহুল্য। আরও পড়ুন: দোকান থেকে ‘ডায়াবিটিস মিষ্টি’, চায়ে স্যাকারিন! চিনি খাওয়া কমাতে গিয়ে বিপদ বাড়ছে

কোমল পানীয়ের এই অতিরিক্ত চিনির থেকেই দীর্ঘ মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা হতে পারে। এই চিনির কারণে শরীরে বিপুল পরিমাণে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি ঢোকে। আর তার থেকে স্থুলতার মতো সমস্যা হচ্ছে। তবে এই ওজন বেড়ে যাওয়াটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ভারতের মতো ডায়াবেটিস প্রবণ দেশে এই অতিরিক্ত চিনি পান করার প্রবণতা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। আমাদের অজান্তেই, ঝাঁঝালো ঠাণ্ডা পানীয়ের আকারে শরীরে প্রচুর পরিমাণে চিনি প্রবেশ করছে।

এক বোতল কোল্ড ড্রিঙ্কে কতটা চিনি থাকে?

একাধিক গবেষণা অনুযায়ী, বেশিরভাগ জনপ্রিয় কোমল পানীয়ের একটি ক্যানেই প্রায় ৯-১০ চা চামচ চিনি থাকে। এটি একদিনের মোট চিনি খাওয়ার দৈনিক সীমার তুলনায় অনেকটাই বেশি। এমনিতেই লোকে বিরিয়ানি, পিজ্জা, বার্গার, ফ্রায়েড চিকেনের মতো উচ্চ ক্যালোরির খাবারের সঙ্গে কোল্ড ড্রিঙ্কস পান করেন। তার উপর যোগ হচ্ছে এই অতিরিক্ত চিনি। ফলে এই জাতীয় পানীয়ের অভ্যাস হয়ে গেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, ডায়াবেটিস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। উপরন্তু, অত্যধিক চিনির কারণে দাঁতের ক্ষয় এবং ক্যাভিটিস-এর মতো দাঁতের নানা সমস্যা হতে পারে।

ফাইল ছবি: রয়টার্স

(REUTERS)

বিজ্ঞাপনের ঢল

কোমল পানীয় ব্র্যান্ডগুলির বিপণন কৌশলের কারণেই যেন এই সমস্যা আরও বেড়ে যাচ্ছে। সংস্থাগুলি শিশু এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের লক্ষ্য করেই বিজ্ঞাপন বানায়। প্রচারে প্রচুর বিনিয়োগ করা হয়। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, অনেক দৌঁড়ঝাঁপ, স্টান্ট করে এসে জনপ্রিয় বলি অভিনেতা, ক্রিকেট তারকা এই ঠাণ্ডা পানীয়ে গলা ভেজাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের পেশিবহুল, মেদহীন শরীরে দেখে হলফ করেই বলে দেওয়া যায়, এই জাতীয় অস্বাস্থ্যকর পানীয় তাঁরা কখনও ছুঁয়েও দেখেন না। পুরোটাই স্রেফ বিজ্ঞাপনের জন্য।

কোমল পানীয়কে মজা, সুখ এবং জনপ্রিয়তার সঙ্গে যেন জুড়ে দেওয়া হয়। আইপিএল-এর খেলার মাঝে, ইউটিউবে চলে সেই বিজ্ঞাপন। ফলস্বরূপ, কোমল পানীয়ের ব্যবহার যেন ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া হালের ইনস্টাগ্রাম রিলস, ইউটিউব ভিডিয়োয় ফুড ভ্লগারকেও দেখা যায়, কোনও জনপ্রিয় ফুড চেনের বার্গার খেতে খেতে কোল্ড ড্রিঙ্কসে গলা ভেজাচ্ছেন। এর ফলে আরও বেশি করে এগুলি পান করার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্যের প্রভাবের বিষয়টি অবশ্য সরকারি স্তরেও আধিকারিকদের চোখে পড়েছে। অত্যধিক চিনি খাওয়া রোধ করার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চিনিযুক্ত পানীয়ের উপর উচ্চ কর আরোপ, কঠোর লেবেলিং নীতি এবং অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতার প্রচারের প্রস্তাব করেছে সরকার। এর পাশাপাশি, স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্বাস্থ্যকর বিকল্প পানীয়ের বিষয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: চিনি খাওয়া কমালেই পাবেন এই আশ্চর্য ফল

বিকল্প কী?

বিকল্প যে একেবারেই নেই, তা কিন্তু নয়। রাস্তায় গরম লাগলে কোল্ড ড্রিঙ্কসের বদলে ডাব খাওয়া যেতে পারে। সুস্বাদু তো বটেই, স্বাস্থ্যের জন্যও দুর্দান্ত। একইভাবে, রেস্তোরাঁয় কোমল পানীয়ের বদলে ফ্রেশ ফলের রস নেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া আইস টি, ইনফিউজড ওয়াটারের মতো পানীয়েও কোল্ড ড্রিঙ্কসের তুলনায় কম চিনি থাকে।

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup