ব্যারাকপুর শুটআউট কাণ্ডে এখনও অধরা অপরাধীরা, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অর্জুন

কেটে গিয়েছে প্রায় একদিন। এখনও অধরা ব্যারাকপুর শুটআউট কাণ্ডের দৃষ্কৃতীরা। লুঠ প্রতিরোধ করতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে এক ব্যবসায়ী যুবক। ক্ষোভে ফুঁসছে ব্যারাকপুরের মানুষ। ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে শ্যুটআউট কাণ্ডে অধরা চারজন দুষ্কৃতী। ডাকাতদের রুখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন ব্যবসায়ী পুত্র। ডাকাতি আটকাতে যাওয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ছেলেকে গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ভরসন্ধ্যায় ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী এলাকায় হাড়হিম করা ঘটনার পর অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা। অন্ধকারে টিটাগড় থানার পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।

ঠিক কী বলেছেন অর্জুন?‌ সাংসদ অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়ছে না। তাদের অনেকের মাথায় রাজনৈতিক নেতাদের হাত থাকতে পারে। আর পুলিশও সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এতে দলের ক্ষতি হচ্ছে। অর্জুন সিং আজ, বৃহস্পতিবার সকালে মজদুর ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‌এলাকার অপরাধ ও অপরাধীদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিচুতলা থেকে পুলিশের উপরতলায় পৌঁছচ্ছে না। থানা স্তরের পিসি পার্টির সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের অসাধু সম্পর্ক থেকে যাচ্ছে। যার ফলে এলাকায় অপরাধ থামছে না। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, পুলিশের ভূমিকা সঠিক নয়। পুলিশ প্রশাসনের উপর মানুষের ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে, তাতে আমাদের দলের ক্ষতি হবে।’‌ তবে অর্জুনের মন্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।

ঠিক কী ঘটেছিল ব্যারাকপুরে?‌ ভরসন্ধ্যায় জনবহুল ব্যারাকপুরে ডাকাতিতে বাধা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয় সোনার দোকান মালিকের পুত্রের। ডাকাতদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি হন দোকান মালিক নীলরতন সিং এবং দোকানের নিরাপত্তা কর্মী শঙ্কর। সোনার দোকানে ডাকাতদের হানা এবং গুলিতে মৃত এবং আহত হওয়ার এই ঘটনায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে যান বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলক রাজোরিয়া–সহ পদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থল ও এলাকার সিসিটিভি খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে সংলগ্ন বিভিন্ন থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। ডাকাতদের গুলিতে মৃত দোকান মালিকের পুত্রের নাম নীলাদ্রি সিং (২৬)। মাত্র ছয় মাস আগে বিয়ে হয়েছিল নীলাদ্রির। আজ ছিল জামাইষষ্ঠী। তার আগেই সব শেষ।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। গোটা রাত কেটে গিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার গোটা দিন শেষ হতে চলল। এই আবহে সাংসদ অর্জুন সিং পুলিশকে দায়ী করে বলেন, ‘‌আগে পুলিশ জনপ্রতিনিধিদের থেকে নিয়মিত রিপোর্ট নিত। কিন্তু ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পরে এখন আর জনপ্রতিনিধিদের থেকে সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করে না পুলিশ। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অপরাধ কমাতে গেলে সমস্ত দুষ্কৃতীদের গণহারে গ্রেফতার করে জেলে ভরতে হবে। আগে পুলিশ অফিসার দেখে অপরাধীরা অপরাধ করতে ভয় পেত। কিন্তু এখন পুলিশ অফিসাররা অপরাধীদের শায়েস্তা করতে ব্যর্থ। ছোট বিষয়ে পুলিশের একাংশ অতি সক্রিয়। কিন্তু অপরাধীরা যে মুক্তাঞ্চল বানিয়ে ফেলছে, তা দেখেও কিছু করতে পারছে না। ৪০ কেজির ভুড়ি নিয়ে নড়তে পারে না। অপরাধী ধরবে কি!‌’‌