একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের ডাক রাজভবনে, রাজ্যপালের পদক্ষেপে বিতর্ক

মঙ্গলবারই রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত কারও মেয়াদ বৃদ্ধি হয়নি। কোনও অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগও ঘটেনি। কিছুদিনের মধ্যে আরও কয়েকজন উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এই আবহে অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকদের রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। বুধবার রাজ্যের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে অভিযোগ। তাঁদের কাছেই জানতে চাওয়া হয়, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিতে তাঁরা প্রস্তুত কি না। সার্চ কমিটিকে সরিয়ে রেখে রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ঠিক কী করেছেন রাজ্যপাল?‌ সূত্রের খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেখানকার এক অস্থায়ী ডিনকে বুধবার ডেকে পাঠানো হয়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ইংরেজি বিভাগের একজন সিনিয়র অধ্যাপক রাজভবনে যান। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে তাঁরা দায়িত্ব গ্রহণে ইচ্ছুক কি না। রাজ্য সরকার স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের নয়া অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। তবে সার্চ কমিটির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তার আগে কার্যভার সামলানোর জন্য সিনিয়র অধ্যাপকদের দায়িত্ব দিতে চাইছে রাজভবন। যা নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ অস্থায়ী উপাচার্যের পদে সিনিয়র অধ্যাপকদের বসানো নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধ আগেই তীব্র হয়ে উঠেছিল। এবার রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যদের কার্যকাল যখন শেষ হয়ে গিয়েছে তখন উপাচার্য নিয়োগে সিভি আনন্দ বোসের এই পদক্ষেপ নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। যদিও এই নিয়ে এখনও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সকলের সঙ্গে আলোচনা করলেও এদিন কাউকেই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে। সুতরাং এই গোপনীয়তা ভাল চোখে দেখছেন না রাজ্য সরকার।

কারা এসেছিলেন রাজভবনের বৈঠকে?‌ এখানে বেশ কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপক এসেছিলেন। যে কটি নাম জানা গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ছিলেন—বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অমিতাভ দত্ত, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যের ডিন অমলেন্দু ভুঁইয়া, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন করে শিক্ষককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল গৌড়বঙ্গ, সিধো–কানহো–বীরসা, বাঁকুড়া, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁদের কাছ থেকেই অস্থায়ী উপাচার্য পদে বসার বিষয়টি জানতে চান রাজ্যপাল বলে সূত্রের খবর।