হাওড়ার সাঁকরাইলে একটি রথযাত্রার শোভাযাত্রার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। একাধিক শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। রথ ছাড়াই কার্যত বিগ্রহ বয়ে নিয়ে যেতে বলেছিল পুলিশ। এনিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এবার সেই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের তীব্র সমালোচনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুলিশ যে শর্ত আরোপ করেছে তা ধর্মীয় আচরণকে বাধা দেওয়ার সামিল। এনিয়ে রাজ্য পুলিশকে কার্যত কোর্টে তুমুল ভর্ৎসনা করা হয়েছে বলে খবর।
আদালত একটি নির্দেশকে সামনে এনেছে যেখানে বলা হয়েছে, ভক্তরা রথ ছাড়াই বিগ্রহগুলি বয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এনিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রাচীন রীতির কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে বিগ্রহদের রথে চাপিয়েই ঘোরানো হয়।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, রথ ছাড়াই প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তা বিগ্রহগুলিকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে পুলিশের এই নির্দেশ একেবারেই যথাযথ নয়। এটা রথযাত্রার উদ্দেশ্যটাই সাধিত করে না।
নির্দেশে বলা হয়েছে বহু শতাব্দী ধরে সমস্ত ধর্মের মানুষ এই রথযাত্রার আনন্দে মাতেন অথবা রথযাত্রায় অংশ নেন। এভাবে রথযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করলে বা শর্ত আরোপ করলে সেটা ধর্মীয় আচরণে হস্তক্ষেপ করার সমান হয়ে যায়। যেটা এই রাজ্যে বা দেশের কোনও প্রান্তে কোনওদিন হয়নি।
বার অ্যান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে,আদালত জানিয়েছে, রথে চেপেই বিগ্রহরা যান। এটাই হাজার হাজার বছর ধরে ভারতে প্রচলিত হয়ে আসছে। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে রথে চাপিয়েই মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এটাই প্রথা। হাজার হাজার বছর ধরে এটা প্রচলিত হয়ে আসছে।
এদিকে এক ব্যক্তি আসলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রথযাত্রার শোভাযাত্রার অনুমতি চেয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে কোর্ট তাকে জানায় ,পুলিশের কাছে আপনি অনুমতি চেয়ে আবেদন করুন। সেই মতো তিনি পুলিশের কাছে যান। কিন্তু পুলিশ নানা শর্ত আরোপ করে বলে খবর। এদিকে পুলিশের কাছ থেকে জবাব পেয়ে অত্যন্ত বিরক্ত ওই ব্যক্তি। এরপর তিনি ফের আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালত জানিয়েছে, ধর্মীয় কর্মসূচি করার পেছনে কারোর যদি কোনও স্বার্থ চরিতার্থ করার ব্যাপার থাকে তবে পুলিশ এনিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে। কোর্টের নির্দেশ রথযাত্রার প্রসেসনে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে বলে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আবেদনকারীকে, সেই নির্দেশই বহাল থাকবে।