Humayun Kabir: জেলা সভাপতিকে অপসারণ না করলে ঘেরাও করা হবে TMC কার্যালয়, হুঁশিয়ারি হুমায়ুনের

মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের দ্বন্দ্ব থামছেই না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আরও প্রকট হয়ে উঠল দুই নেতার দ্বন্দ্ব। এবার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শাওনি সিংহ রায়ের অপসারণের দাবি জানালেন হুমায়ুন কবীর। সে ক্ষেত্রে তাঁকে অপসারণ না করা হলে বহরমপুরের জেলা তৃণমূল কার্যালয় ঘেরাও করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল বিধায়ক। শুধু তাই নয়, এই নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন হুমায়ূন কবীর। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘৭২ ঘণ্টার মধ্যে শাওনি সিংহ রায়কে অপসারণ না করা হলে বহরমপুরের জেলা তৃণমূল কার্যালয় ঘেরাও করব। প্রয়োজনে লোক নিয়ে আসব। লোক নিয়ে এসে আমি দাবি আদায়ের চেষ্টা করব।’ এরপরে তিনি রাজ্য নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজ্য নেতৃত্ব আমার দাবি মেনে নিলে ভালো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি শাওনির পক্ষে থাকেন তাহলে আমরা কী করব তা পরে বলব।’ যদিও হুমায়ূন কবীরের দাবি, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কোনও চ্যালেঞ্জ ছুড়ছেন না। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সহকর্মী। তিনি দল চালান না। নন্দীগ্রামে হেরে যাওয়ার পরে ২১৩ জন বিধায়ক তাঁকে দলনেত্রী নির্বাচিত করার জন্য রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন। সেই বিধায়কের মধ্যে তিনিও রয়েছেন। তাঁর সই রয়েছে। শাওনির সই নেই। 

হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, তিনি প্রয়োজনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এখন শাওনিকে প্রয়োজন নাকি তাঁকে প্রয়োজন সেটা মুখ্যমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘শাওনিকে প্রয়োজন নাকি আমাকে প্রয়োজন সেটা মুখ্যমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই।’ অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের উপরে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে হুঁশিয়ারি হুমায়ুন কবীরের।

মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আগে থেকেই ছিলই। তবে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ার পরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে। মূলত টিকিট দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং জেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে হুমায়ুন কবীরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বিধায়কের অভিযোগ, জেলা তৃণমূল সভাপতি এবং চেয়ারম্যান নিজেদের ইচ্ছামত প্রার্থী বেছে নিয়েছে। বিধায়কদের লোকেদের কোনও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। ব্লক সভাপতিদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে সেখানে ছুটে যান তৃণমূল মন্ত্রী তথা প্রবীণ নেতা মলয় ঘটক। তিনি সেখানে বিধায়ক এবং জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করেন। তারপরও হুমায়ূন কবীর নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস।