‘ক্ষমতা থাকলে সালারে ঢুকে দেখান’, মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাকে হুঁশিয়ারি হুমায়ুনের

মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি এবং জেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের দ্বন্দ্ব এখন তুঙ্গে। আর এবার মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন হুমায়ুন কবীর। গ্রন্থাগার মন্ত্রীকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে হুমায়ন কবীর বলেছেন, ‘সালারে ঢুকে দেখুন, কত ক্ষমতা আছে দেখব।’ দুই নেতৃত্বের সংঘাতে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।

আরও পড়ুন: জেলা সভাপতিকে অপসারণ না করলে ঘেরাও করা হবে TMC কার্যালয়, হুঁশিয়ারি হুমায়ুনের

পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে জেলার সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের সঙ্গে হুমায়ুনের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে। হুমায়ুন কার্যত দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করছেন। শুক্রবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ভরতপুর ২ নম্বর ব্লকে একটি সভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সিদ্দিকুল্লা। 

সেই সভা থেকে হুমায়ুনকে নিশানা করে সিদ্দিকুল্লা বলেছিলেন, ‘দল বিরোধী কাজ করতে-করতে বিধায়ক এখন ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন। তিনি আগুন নিয়ে খেলছেন। আর সামলাতে পারবেন না।’ এদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে সভার আয়োজন করা হয় তাতে ব্লক সভাপতি এবং অন্যান্য নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও হুমায়ুন সেই সভায় ছিলেন না। তাতেই কার্যত বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী। হুমায়ূন কবীরকে আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘দলে থাকবো আর দল বিরোধী কাজ করব সেটা হতে পারে না। নৌকা এখনো নদীতে নামেনি।’

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতে টিকিট বিলি নিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন হুমায়ুন। তারপরেই যাদের তৃণমূল থেকে প্রার্থী করা হয়নি সেই সমস্ত আসনে নির্দল প্রার্থীদের জেতানোর ডাক দেন তৃণমূল বিধায়ক। টিকিট বিলি নিয়ে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। দলের নির্দেশকে অমান্য করে সরাসরি নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করেন তিনি।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে জেলা সভাপতি শাওনির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলেন হুমায়ুন। তিনি সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়ে শাওনির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জেলা সভাপতির পদ থেকে শাওনিকে অপসারণ না করা হলে তিনি দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করবেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে খোদ সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বিধায়ক এবং অন্যান্য নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন। তারপরে অবশ্য দলের চাপে হুমায়ুন নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেন। কিন্তু তারপরও দলের নির্দেশকে অমান্য করে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করছেন। তা নিয়ে সিদ্দিকুল্লা তাঁকে আক্রমণ করলে পালটা হুমায়ুনও মন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি করেন।