Hottest and driest June in India: ১২২ বছরে সবথেকে কম বৃষ্টি ও সবথেকে বেশি গরম- জুনে পুড়েছে ভারতের এই অংশ

জয়শ্রী নন্দী

এবার জুনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টির আকাল দেখা দিয়েছিল। পড়েছিল অসহ্যকর গরম। আর বৃষ্টির ঘাটতি এবং গরম যে কতটা বেশি ছিল, তা মৌসম ভবনের পরিসংখ্যানে সামনে এল। মৌসম ভবনের পরিসংখ্যন অনুযায়ী, গত ১২২ বছরে দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলে শুষ্কতম এবং উষ্ণতম জুন কেটেছে ২০২৩ সালেই। এবার জুনে দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলে মাত্র ৮৮.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা ১৯০১ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। ১৯৭৬ সালের জুনে বৃষ্টি হয়েছিল ৯০.৭ মিমি। যা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। সেখানে ওই এলাকায় জুনের দীর্ঘকালীন গড় বৃষ্টির পরিমাণ ১৬১ মিমি। অন্যদিকে, এবার জুনে দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার ফলে ১৯০১ সালের পর থেকে উষ্ণতম জুনের নজির গড়েছে। এতদিন উষ্ণতম জুনের রেকর্ড ছিল ২০১৪ সালের ঝুলিতে।

আরও পড়ুন: Cyclonic circulation weather update: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত, অবশেষে কি ভারী বৃষ্টি নামবে দক্ষিণবঙ্গে?

বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, ‘দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলে এবার দেরিতে বর্ষা প্রবেশ করেছে। পরে যখন বর্ষা ঢুকেছে, তখনও জোরালোভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর অগ্রসর হয়নি। যখন বৃষ্টির ঘাটতি হয়, তখনই পারদ চড়তে থাকে। ২৫ জুন থেকে পশ্চিম উপকূলে বৃষ্টি বাড়তে শুরু করেছে।’

আরও পড়ুন: Monsoon Weather Update: গোটা দেশে ‘এন্ট্রি’ নিয়ে নিয়েছে বর্ষা! ঘোষণা আইএমডির, আগমন ‘স্বাভাবিক’ সময়ের কিছু দিন আগে

ভারতীয় মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল আরও জানিয়েছেন, মাত্র দু’দিন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের সাহায্য পেয়েছিল দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলের বর্ষা। ৭ জুন তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড়। ৯ জুন পর্যন্ত বিপর্যয়ের মদত পেয়েছিল দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলের বর্ষা। কিন্তু তারপর উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়। বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘আরব সাগরের বর্ষা একেবারে ম্রিয়মান থাকায় ২৫ জুন পর্যন্ত দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দুর্বল ছিল। এখন সেখানে বর্ষা অত্যন্ত সক্রিয় আছে।’

ভারতীয় মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, এবার জুনে দক্ষিণ উপদ্বীপ অঞ্চলের ৩৬টি মহকুমার মধ্যে তিনটিতে অত্যধিক বেশি বৃষ্টি (৬০ শতাংশ বা তার বেশি) হয়েছে। সাতটি মহকুমায় আবার বেশি বৃষ্টি (২০ শতাংশ থেকে ৫৯ শতাংশ), সাতটি মহকুমায় স্বাভাবিক বৃষ্টি (১৯ শতাংশ কম থেকে ১৯ শতাংশ বেশি), ১৭টি মহকুমায় বৃষ্টির ঘাটতি (৫৯ শতাংশ কম থেকে ২০ শতাংশ কম) এবং দুটি মহকুমার মারাত্মক বৃষ্টির ঘাটতি (৯৯ শতাংশ কম থেকে ৬০ শতাংশ কম) হয়েছে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।

সার্বিকভাবে পুরো দেশের নিরিখে ১৯০১ সাল থেকে এবার সপ্তম উষ্ণতম জুন কেটেছে। গড় তাপমাত্রা ছিল ২৯.৯৯ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের থেকে ০.৭৫ ডিগ্রি বেশি। আবার গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে এবার দশম উষ্ণতম জুন কাটিয়েছে ভারত (৩৪.৬ ডিগ্রি ছিল, তা স্বাভাবিকের থেকে ০.৮৭ ডিগ্রি বেশি)। আবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নিরিখে এবার অষ্টম উষ্ণতম জুন কাটাতে হয়েছে ভারতবাসীকে। এবার গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৩৯ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের থেকে ০.৬২ ডিগ্রি বেশি। মূলত ৫ জুন থেকে ২৪ জুনের মধ্যে স্বাভাবিকের থেকে বেশি তাপমাত্রা ছিল।