বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র: উজরা জেয়া

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির একটি অংশ হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এবং বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদার হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করতে চায় বলে জানিয়েছেন সফররত মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তারপর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন।

গত ১১ জুলাই আজরা জেয়া ঢাকায় আসেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে যুক্তরাষ্ট্র কড়া পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে চাইলে আজরা জেয়া জানান, এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি।

তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি কারণ আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে স্বীকৃতি দেই এবং সেই সম্পর্ককে আরও গভীর করার ওপর জোর দেই।

সবার সঙ্গে গঠনমূলক ও ফলদায়ক আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আজরা জেয়া বলেন, গতকাল আমরা রাজনৈতিক সমাবেশ দেখেছি, যা ছিল শান্তিপূর্ণ। আমরা এ ধরনের চিত্র ভবিষ্যতেও দেখতে চাই।

বৈঠকে জন নিরাপত্তা সচিব, আইন সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ইমরান ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।

সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ,অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য সব মন্ত্রী যাদের সঙ্গে আন্ডার সেক্রেটারির কথা হয়েছে তারা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে আজরা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনও রকম ভীতি ছাড়া সাংবাদিকদের খবর পরিবেশন করা এবং মানবপাচার প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক সংস্থা, নির্বাচনে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ এবং সুশাসনের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ। গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ যেখানে সব বাংলাদেশি উন্নতি করবে – সেটিকে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে।

রোহিঙ্গা সহায়তা

রোহিঙ্গাদের জন্য এ পর্যন্ত ২০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ আরও ৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার নতুন সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন আজরা জেয়া।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপদ, সম্মানজনক, স্বেচ্ছাপ্রণোদিত প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্ঠাকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু ওই পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিভিন্নমুখী ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্কের কথা পুর্নব্যক্ত করেছি।

তিনি আরও বলেন, শ্রম অধিকার সংস্কারে বাংলাদেশ গত এক দশকে কত দূর অগ্রসর হয়েছে সেটি আমি তাকে ব্যখ্যা করেছি। এরমধ্যে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিও রয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নাগরিক অধিকার ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। এছাড়া বেসামরিক নিরাপত্তা ও মানবপাচার প্রতিরোধ নিয়ে কথা হয়েছে। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টিও পুর্নব্যক্ত করেছি।